পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিলাইদহ, ১৬ই জুন, >bアおこ | যতই একলা আপনমনে নদীর উপরে কিম্বা পাড়াগায়ে কোন খোলা জায়গায় থাক যায়, ততই প্রতিদিন পরিষ্কার বুঝতে পারা যায়, সহজভাবে আপনার জীবনের প্রাত্যহিক কাজ করে যাওয়ার চেয়ে সুন্দর এবং মহৎ আর কিছু হতে পারে না । মাঠের তৃণ থেকে আকাশের তারা পর্য্যন্ত তাই করচে ; কেউ গায়ের জোরে অণপনার সীমাকে অত্যন্ত বেশি অতিক্রম করবার জন্যে চেষ্টা করচেনা বলেই প্রকৃতির মধ্যে এমন গভীর শাস্তি এবং তাপার সৌন্দৰ্য্য—অথচ প্রত্যেকে যেটুকু করচে সেটুকু বড় সামান্য নয়—ঘাস আপনার চূড়ান্ত শক্তি প্রয়োগ করে তবে ঘাসরূপে টিকে থাকতে পারে, তার শিকড়ের শেষ প্রান্তটুকু পৰ্য্যস্ত দিয়ে তাকে রসাকর্ষণ করতে হয়, সে যে নিজের শক্তি লঙ্ঘন করে বটগাছ হবার নিস্ফল চেষ্টা করচেনা এইজন্যই পৃথিবী এমন সুন্দর খামল হয়ে রয়েচে । বাস্তবিক, বড় বড় উদ্যোগ এবং লম্বা-চোঁড়া কথার দ্বারা নয় কিন্তু প্রাত্যহিক ছোট ছোট কর্তব্য সমাধাদ্বারাই মানুষের সমাজে যথাসম্ভব শোভা এবং শাস্তি আছে। কবিত্বই বল আর বীরত্বই বল কোনটাই আপনাতে আপনি সম্পূর্ণ নয়, কিন্তু একটি অতি ক্ষুদ্র কৰ্ত্তব্যের মধ্যেও তৃপ্তি এবং সম্পূর্ণত আছে ৷ বসে বসে হাসফাস করা, কল্পনা করা, কোন অবস্থাকেই আপনার যোগ্য মনে না করা, এবং ইতিমধ্যে সম্মুখ দিয়ে সময়কে চলে যেতে দেওয়া, এর চেয়ে হেয় আর কিছু হতে পারে না । যখন মনে মনে প্রতিজ্ঞ করা যায় নিজের সাধ্যায়ত্ত সমস্ত * কৰ্ত্তব্য সত্যের সঙ্গে, বলের সঙ্গে, হৃদয়ের সঙ্গে সুখদুঃখের ভিতর দিয়ে পালন করে যাব, এবং যখন বিশ্বাস হয় তা করতে পারব, তখন সমস্ত জীবন আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, ছোটখাট দুঃখবেদন একেবারে দূর হয়ে যায়। অবশু, আমার জীবনের প্রতিনি এবং প্রত্যেক মুহূৰ্ত্ত আমার সম্মুখে এখন প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত নেই, তাই