পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিলাইদহ, ৩রা ভাদ্র, > ケ。ミ এমন সুন্দর শরতের সকালবেলা ! চোখের উপর যে কি সুধাবর্ষণ করচে সে আর কি বলব ! তেমনি সুন্দর বাতাস দিচ্চে এবং পাখী ডাক্‌চে । এই ভরা নদীর ধারে বর্ষার জলে প্রফুল্ল নবীন পৃথিবীর উপর শরতের সোনালি আলো দেখে মনে হয় যেন আমাদের এই নবযৌবন ধরণীসুন্দরীর সঙ্গে কোন এক জ্যোতিৰ্ম্ময় দেবতার ভালবাস। চলচে—তাই এই আলো এবং এই বাতাস, এই অৰ্দ্ধ উদাস অৰ্দ্ধ সুখের ভাব, গাছের পাতা এবং ধানের ক্ষেতের মধ্যে এই অবিশ্রাম স্পন্দন,—জলের মধ্যে এমন অগাধ পরিপূর্ণত, স্থলের মধ্যে এমন খামত্র, আকাশে এমন নিৰ্ম্মল নীলিমা । প্রেমের যেমন একটা গুণ আছে তার কাছে জগতের মহা মহা ঘটনাও তুচ্ছ মনে হয় এখানকার আকাশের মধ্যে তেমনি যে একটি ভাব ব্যাপ্ত হয়ে আছে তার কাছে কলকাতার দৌড়ধাপ হাসফাস ধড়ফড়ানি ঘড়ঘড়ানি ভারি ছোট এবং অত্যন্ত সুদূর মনে হয় । চারদিক থেকে আকাশ আলে। বাতাস এবং গান একরকম মিলিতভাবে এসে আমাকে অত্যন্ত লঘু করে আপনাদের সঙ্গে যেন মিশিয়ে ফেলুচে—আমার সমস্ত মনটাকে কে যেন তুলিতে করে তুলে নিয়ে এই রঙীন শরৎপ্রকৃতির উপর আর এক পোচ রঙের মত মাখিয়ে দিচ্চে,—তাতে করে এই সমস্ত নীল সবুজ এবং সোনার উপর আর একটা যেন নেশার রং লেগে গেছে । বেশ লাগচে । “কি জানি পরাণ কি যে চায়” বলতে লজ্জা বোধ হয় এবং সহরে থাকলে বলুতুম না—কিন্তু ওটা ষোলো আন কবিত্ব হলেও এখানে বলতে দোষ নেই। অনেক পুরোণো শুকনে কবিতা – কলকাতায় যাকে উপহাসানলে জালিয়ে ফেলবার যোগ্য মনে হয় তারা এখানে আসবামাত্র দেখতে দেখতে মুকুলিত পল্লবিত হয়ে উঠে । ய ை வை