পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
(১৯৪)

সঙ্গীত—একটি বিশুদ্ধ করুণ গম্ভীর অমিশ্ররাগিণী। দুটোই আমাদের বিচলিত করে অথচ দুটোই পরম্পর বিরোধী। কি করা যাবে! প্রকৃতির গোড়ায় একটা দ্বিধা একটা বিরোধ আছে;—রাজা এবং রাণীর মধ্যে সমস্ত বিভক্ত। দিন এবং রাত্রি, বিচিত্র এবং অখণ্ড, পরিব্যক্ত এবং অনাদি। আমরা ভারতবর্ষীয়েরা সেই রাত্রির রাজত্বে থাকি—আমরা অখণ্ড অনাদির দ্বারা অভিভূত। আমাদের নির্জ্জন এককের গান, য়ুরোপের সজন লোকালয়ের সঙ্গীত। আমাদের গানে শ্রোতাকে মনুষ্যের প্রতিদিনের সুখদুঃখের সীমা থেকে বের করে নিয়ে নিখিলের মূলে যে একটি সঙ্গীহীন বৈরাগ্যের দেশ আছে সেইখানে নিয়ে যায়—আর য়ুরোপের সঙ্গীত মমুষ্যের সুখদুঃখের অনন্ত উত্থানপতনের মধ্যে বিচিত্রভাবে নৃত্য করিয়ে নিয়ে চলে।