পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আচলগড়ের রাজা br? খোলার ব্যাপার দেখিয়া বাঘের এমনই ভয় লাগিল যে, সেখানে অধিকক্ষণ থাকা সে ভালো বোধ করিল না, চটুপটু ঘরে ফিরিয়া গেল। এমন শোনা যায়, বাঘের চোখের দিকে একদৃষ্টে চাহিয়া থাকিলে বাঘ আক্রমণ করিতে সাহস করে না । এটা লোকের মুখে শোনা কথা। কথাটার সত্যমিথ্যা ঠিক বলিতে পারি না। নিজে পরখ করিয়া যে বলিব এমন সুবিধা বা সাধও নাই। পরখ করিতে গেলে ফিরিয়৷ আসিয়া বলিবার অবকাশ না থাকিতে পারে। নহর খার আর-একটি গল্প বলি। রাজপুতদের এক প্রকার খেলা আছে । ঘোড়ায় চড়িয়া একটা গাছের নীচে দিয়া ঘোড়া ছুটাইয়া দিতে হয় । ঘোড়া যখন ছুটিতেছে তখন গাছের ডাল ধরিয়া ঝুলিতে হয়, ঘোড়া পায়ের নীচে দিয়া চলিয়া যায় । বাদশাহের এক ছেলে একবার নহর খাকে এই খেলা খেলিতে হুকুম করেন । নহর রাগিয়া উঠিয়া বলিলেন, “আমি তো আর বাদর নই। রাজা যদি খেলা দেখিতে ইচ্ছা করেন তো লড়াই করিতে হুকুম দিন, একবার তলোয়ারের খেলাটা দেখাইয়া দিই।” ৰাদশাহ-পুত্র বলিলেন, “আচ্ছা, তুমি সৈন্য লইয়া সিরোহীর রাজা মুরতানকে ধরিয়া লইয়া আইস ৷” নহর রাজি হইলেন । সিরোহীর রাজা অচলগড় নামক র্তার এক পর্বতের হর্গের মধ্যে লুকাইয়া রহিলেন । নহর বাছা-বাছা একদল লোক লইয়া গভীর রাত্রে গোপনে হর্গের মধ্যে গিয়া রাজাকে নিজের পাগড়ির কাপড়ে বাধিয়া ফেলিলেন । রাজাকে এইরূপে বন্দী করিয়া নহর তাহাকে দিল্লীতে নিজের প্রভু যশোবন্ত সিংহের নিকটে আনিয়া দিলেন । যশোবস্ত স্বরতানকে বাদশার সভায় লইয়া যাইবেন স্থির করিলেন । এবং সেইসঙ্গে কথা দিলেন যে, বাদশাহের সভায় কেহ তাহাকে কোনোরূপ অপমান করিতে পরিবেন না । সিরোহীর রাজাকে আরঞ্জীবের সভায় লইয়া যাওয়া হইল। দস্তুর আছে যে, বাদশাহের সভায় গেলে বাদশাহকে সকলেরই নত হইয়া সেলাম করিতে