পাতা:ছোটদের অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অকুলান হয়, সুরেশ্বর নিজেই তাহা দিয়া দেয়, কাহাকেও বলে না। অপু প্ৰথমে তাহা জানিত না, মাস দুই থাকিবার পর তাহার সন্দেহ হইল প্ৰতিমাসে সুরেশ্বর পচিশ-ত্রিশ টাকা দোকানের দেন শোধ করে, অথচ কাহারও নিকট চায় না কেন ? সুরেশ্বরের কাছে একদিন কথাটা তুলিলে, সে হাসিয়া উড়াইয়া দিল। সে বেশী এমন কিছু দেয় না, যদিই বা দেয়-তাহাতেই বা কি ? তাহাদের যখন আয় বাড়িবে তখন তাহারাও অনায়াসে দিতে পরিবে, কেহ বাধা দিবে। मां ऊँ२क নির্মল রবি ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি করিতে করিতে ঘরে ঢুকিল । তাহার গায়ে খুব শক্তি, সুগঠিত মাংসপেশী, চওড়া বুক। অপুর মতই বয়স। হাতের ভিতর একটা কাগজের ঠোঙা দেখাইয়া বলিল —নতুন মটরশুটি লঙ্কা দিয়ে ভেজে অপু হাত হইতে ঠোঙাটা কাড়িয়া লইয়া বলিল-দেখি ? পরে হাসিমুখে বলিল-সুরেশ্বরদা, স্টোভ ধরিয়ে নিন-আমি মুড়ি আনি —ক’পয়সার আনবো ? এক-দুই-তিন-চার—আমার দিকে আঙুল দিয়ে গুণো না ওরকম— অপু হাসিয়া নির্মলের দিকে আঙুল দেখাইয়া বলিল—তোমার দিকেই আঙুল বেশী ক’রে দেখাবো।-তিন-তিন-তিন— নির্মল তাহাকে ধরিতে যাইবার পূর্বে সে হাসিতে হাসিতে ছুটয়া বাহির হইয়া গেল। সুরেশ্বর বলিল-একরাশ বই এনেছে কলেজের লাইব্রেরী থেকে-এতও পড়তে পারে-মায় মমসেনের রোমের হিষ্ট্রি এক ভালুমি অপুর গলা মিষ্টি বলিয়া সন্ধ্যার পর সবাই গান গাওয়ার জন্য ধরে। কিন্তু পুরাতন লাজুকপনা তাহার এখনও যায় নাই, অনেক সাধ্যসাধনার পর একটি বা দুটি গান গাহিয়া থাকে, আর কিছুতেই গাওয়ানো যায় না। কিন্তু রবি ঠাকুরের কবিতার সে বড় ভক্ত, নির্মলের চেয়েও । যখন কেহ ঘরে থাকে না, নির্জনে হাত-পা নাড়িয়া আবৃত্তি করে WS