পাতা:ছোট কাকী ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাশ ফিরাইয়া দিলে রমণী আমাকে দেখিতে পাইল । একবার আমার মুখের দিকে চাহিল। তাহার চক্ষে একটি অলৌকিক তীব্ৰ জ্যোতিঃ দেখিতে পাইলাম। ইহলোকের প্রান্তসীমায় সমুপস্থিত। ” মরণাহত কোনও নর বা নারীর চক্ষে তেমন জ্যোতিঃ পূর্বে কখন দেখি নাই। রমণী অতি ধীরে আমার হাতখানি তাহার উভয় হস্তের ? মধ্যে টানিয়া লইল । একবার তাহার ওষ্ঠ নড়িল, যেন কি বলিবার চেষ্টা করিতেছিল ; কিন্তু কথা ওষ্ঠ অতিক্রম করিতে পারিল না ; আমি বাস্পরুব্ধ কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিলাম “রমণী ! কথা কহিতে কি বড় কষ্ট হইতেছে ?” রমণী ক্ষীণস্বরে বলিল, “কষ্ট? না, কষ্ট কিছুই না, আমি চলিলাম। জানি, একদিন তুমিও আসিবে ?” রাত্রিশেষে সব শেষ হইয়া গেল। সুরবালা রমণীর বুকের উপর পড়িয়া কঁাদিতে লাগিল। রমণীর মৃত্যুচ্ছায়াসমাচ্ছন্ন পাণ্ডুর মুখের দিকে আমি আর চাহিতে পারিলাম না, ধীরে ধীরে রাজপথে আসিলাম না। আকাশে চাদের আলো, বাতাসে ফুলের গন্ধ, বিজন রাজপথ, স্তব্ধপ্ৰকৃতি যেন নিদ্রামোরে আচ্ছন্ন। আমি উন্মত্তের ন্যায় পথ বহিয়া চলিতে লাগিলাম। ক্রোশের পর ক্রোশ অতিক্রম করিলাম। ক্রমে পুৰ্ব্বাকাশ লোহিত হইয়া উঠিল; চন্দ্ৰকিরণ মলিন হইয়া গেল ; বনান্তরালে বিহঙ্গের পক্ষান্দোলন কৰ্ণে প্ৰবেশ করিতে লাগিল ; মুক্ত-প্ৰান্তরের উপর দিয়া সুশীতল সমীরণপ্ৰবাহ নিদ্রাতুর বিশ্বের নিঃশ্বাসের মত বহিয়া গেল ; চরাচর ধবনিত করিয়া, আমার হৃদয় মথিত করিয়া কেবল একটা কথা আমার কৰ্ণে প্ৰবেশ করিতে লাগিল, “আর সময় নাই, আমি * vtr ]