পাতা:জন্মবীজ (১৯৪২).pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাক্ষী রইল শ্মশানভূমি, সাক্ষী রইল মহাকাল, সাক্ষী রইল আগুন । খুব দরে যেন রাতজাগা পাখি উঠল ডেকে । সসাগরা প্রাস্তরে নক্ষত্রেরা লেনো এল যেন জোনাক পোকা । আমার সমস্ত বোধ তখন হারিয়ে যেতে চাইছে। সমস্ত ভালোবাসা হয়ে উঠছে তীব্র । আমি অনেকটা আমার প্রতিমূৰ্ত্তির মত দাড়িয়ে রইলাম অকপট । আগুন আমায় ডাকল . . . আসবি ? আমার ভিতরটা হু হু করে উঠল । একবার মনে হল ও শব আমার নয় । আমি নিরুত্তর রইলাম । শব আমায় বলল . . . ফুল আনিস নি ? কতদিন ফুল দেখি নি । মুনির স্নান গিয়েছিল হয়ে । কিন্তু আমি আর অপেক্ষা করি নি । মধ্যে প্রবেশ করলাম । আগুন আমাকে দেখে প্রশমিত হল । আগুনের আঁচে আমি একটুও পুড়লাম না। আমার প্রথম ও দ্বিতীয় মৃত্যু কৈশোরে হয়েছিল। তৃতীয় ও চতুর্থ মৃত্যুর দায় আমার ছিল না কখনই । পঞ্চম ও ষষ্ঠ মৃত্যুর ভার সস্তানদের দিয়ে আমি এখন শেষ মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত । যা কিনা মানুষের জন্য । যা কিনা মৃতু্যহীন অবশ্য পরে জেনেছিলাম আমাকে পোড়াবার মত অবশিষ্ট কিছু আগুন পায় নি । চরাচরের সেই নিগুঢ় সন্ধ্যায় আমি আর অপেক্ষা করিনি । আগুনের মধ্যে থেকে তুলে এনেছিলাম শব । আর মুনির অগোচরে সেই শব কাধে করে চলে এসেছিলাম বাইরে। [ এতটা শুনে সবাই আশ্চর্য। চলে এলে। হ্যা আমি চলে এলাম। উৎস জুড়ে তো আরো হাহাকার, আরো শুণ্যতা । তার চেয়ে এই ভালো । যখন আমি জেনে গিয়েছি আমাদের পরিণাম কিছু নেই । ] 89