বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জন্ম ও মৃত্যু - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৭
লেখক 

মুখ থেকে চোখ ফেরায়নি—চশমার ভেতর দিয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে। একটুখানি চুপ করে থেকে ছেলেটি বললে—আপনার কাছে এলাম, যদি মনে কিছু না করেন তা’হলে বলি।

 —বলুন না

 —আমাকে একটু করে লেখা শেখাবেন? আমি এবার বাংলা নিয়ে বি-এ পাস করেছি। এখানকার স্কুলে চাকরি পেয়ে এসেচি। আমার দাদা এখানকার সাবরেজিষ্ট্রার। আমার বড় ইচ্ছে আমি লেখক হই। কিছু কিছু লিখেছিলামও, সেগুলো এনেচি সঙ্গে করে—আপনার সময় হবে দেখবার?

 আমার সম্মতি পেয়ে ছোকরা একখানা খাতা ভয়ে ভয়ে আমার হাতে দিয়ে বললে—আই-এ পড়বার সময় লিখেছিলুম। চার-পাঁচটা ছোট গল্প, কতকগুলো কবিতা আর গান আছে।

 ও দেখি আমার মুখের দিকে সাগ্রহ দৃষ্টিতে চেয়ে আছে আমি কি মত দিই তাই শোনবার জন্যে। বললুম—মন্দ হয়নি, বেশ লাগল—তবে আপনার গানগুলো—ভালোই হয়েচে!

 ছোকরা উৎসাহে ও আগ্রহে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে আমার মুখের দিকে চেয়ে বললে আপনার ভালো লেগেচে?···আচ্ছা, গল্পগুলো? ওগুলোর মধ্যে কিছু দেখলেন?

 বিশেষ কোনো ধরা-ছোঁয়া না দিয়ে বললুম—বেশ প্রমিস্ আছে। আপনার বয়েস কম, লিখতে লিখতে হবে।

 ছেলেটি যেন আনন্দ কোথায় রাখবে ভেবে পেলে না। বললে দেখুন আমার অনেকদিন থেকে সাধ আমি একজন লেখক হবো। আমি বি-এতে বাংলা নিয়েছিলুম ব’লে বাড়িতে সবাই বকে।

 আমার খুড়তুতো ভাইয়েরা বড় বড় চাকরি করে—তারা ভালো ইংরিজী জানে। তারা দাদার কাছে চিঠি লিখলে—ওকে