১১৫
বড়বাবুর বাহাদুরি
বেলেঘাটার মুখুয্যে মশায়ের আড়তে সে আর যাইতে প্রস্তুত নয়। অবিশ্যি এ কথা ঠিক যে, তাহার থাকিবার ও খাইবার কোনাে কষ্ট কলিকাতায় হয় না। আজকাল আড়তে উঠিলেই হইল। আড়তের রাঁধুনী বামুন তাহাকে চিনে, তাহাকে গিয়া বলিলেই হইল—ও কুবের ঠাকুর। এখানে দুটো খাব এ বেলা।
উহারা যতই খাতির করুক, এবার হরিপদ বেলেঘাটার আড়তে গিয়া উঠে নাই।
নগু দালাল তাে জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরিয়া গাছ-গাছড়া সংগ্রহ করে, তাহাকে সে লাভের একটা মােটা অংশ কেন দিতে যাইবে?
কলিকাতায় এবার আসিয়া সে শুনিল, হিন্দুস্থান কেমিক্যাল্ কোম্পানী শীতের মরসুমে এই রকম গাছ-গাছড়া কিনিয়া থাকে।
সে সােজা গিয়া হাজির হইল হিন্দুস্থান কেমিক্যাল্ কোম্পানীর আপিসে। প্রচণ্ড ব্যাপার। লােকজন, লিফ্ট্, দরওয়ান, ঘােরানাে দরজা, দিনমানে ইলেক্ট্রিক্ আলো জালিয়া কাজ চলিতেছে। ঘন ঘন টেলিফোন বাজিবার শব্দ। এই জন্যেই বােধ হয় নগু দালালের শরণাপন্ন হইতে হয়। এখানে জিনিস বেচা কি পাড়াগাঁয়ে লােকের কর্ম? অবশেষে সন্ধান মিলিল এন্কোয়ারী আপিস থেকে।
জিনিস ক্রয় করিবার ভার যার উপর, তার বয়েস খুব বেশি নয়। লােকটা মাল দেখিয়া শুনিয়া যা দর বলিল, বেলেঘাটা মুখুয্যে মশায়ের আড়তের দরের তুলনায় মনপিছু অন্ততঃ আট আনা বেশি।
মাল নামাইয়া ওজন করিয়া দিতে দেরি হইয়া গেল। কেরানী বাবুটি জিজ্ঞাসা করিল—আপনি চেক নেবেন, না নগদ