পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৩১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৭০
জয়তু নেতাজী

পাওয়া যাইবে না, কিন্তু তাঁহার রাজনৈতিক কর্ম্মচর্য্যায় পাওয়া যাইতে পারে। ইহাতেও যদি মতভেদ থাকে, তথাপি ‘ভারতবর্ষের প্রাচীন ঐতিহ্য’ ও মহাত্মার ঐ অহিংসা-ধর্ম্মের মধ্যে কোথায় সেই অবিচ্ছেদ্য যোগ আছে, তাহা আমরা বুঝিলাম না। আমরা আর সকলই সহ্য করিতে পারি, কিন্তু এই মিথ্যাটা অসহ্য হইয়া উঠিয়াছে; তার কারণ, আমরা রাজনীতি বুঝি না বটে, কিন্তু হিন্দুর ধর্ম ও ঐতিহ্য কি তাহা কিঞ্চিৎ বুঝিবার দাবী রাখি―রাজনৈতিক নেতা ও রাজনৈতিক সম্পাদকের মত সর্ব্বসংস্কারমুক্ত খাঁটি হিন্দু আমরা নহি। ‘রক্তাক্ত বিপ্লব’ কথাটা অতিশয় কটু, তাহাতে সন্দেহ নাই―লেখক উহা আধুনিক পাশ্চাত্য ভাষা হইতে সংকলন করিয়াছেন বলিয়া মনে হয়। কিন্তু ঐরূপ দুই একটি আধুনিক বচনের দ্বারা মানব-ইতিহাস, তথা ভারত-ইতিহাসের সত্য উড়াইয়া দেওয়া যায় না। ভারতবর্ষ কুরুক্ষেত্রকে ধর্ম্মক্ষেত্র বলে―সেই ‘রক্তাক্ত বিপ্লবে’র ভূমিটাই তাহার পরম পবিত্র তীর্থ হইয়া আছে। গান্ধী-ধর্ম্মও ভারতে নূতন নয়, বস্ততঃ গান্ধীজীর একটি কথাও মৌলিক নয়―কেবল তাহার পন্থা বা প্রয়োগ বিধিটাই নূতন―অর্থাৎ 'unhistorical’। ঐ অহিংসা-ধর্ম্মও বৌদ্ধ ও জৈনধর্ম্মের একটা রাজনৈতিক সংস্করণ মাত্র। আবার, ভারতীয় শাস্ত্র, দর্শন ও ভারতের যোগমার্গ যাঁহারা জীবনে অভ্যাস করিয়াছেন তাঁহাদের অনেকের মতে ঐ বৌদ্ধধর্ম্মই ভারতের অধঃপতনের কারণ। উপরি-উদ্ধৃত উক্তিটি যাঁহার তিনি কি ভারতীয় ঐতিহ্য-বিষয়ে এমনই ব্যুৎপন্ন―এবং সার্ব্বজনীন জীবনধর্ম্ম সম্বন্ধেও এমনই জ্ঞানবান যে, গান্ধীপ্রচারিত ঐ ধর্ম্মকে শ্রেষ্ঠ জীবন-বাদ ও ভারতীয় ঐতিহ্যের সারতত্ত্ব বলিয়া এমন অকুতোভয়ে মত প্রকাশ করিয়াছেন? ভারতে এখনও হিন্দুধর্ম্মজ্ঞ অনেক সিদ্ধ-সাধক এবং সন্ন্যাসী-গুরু বাঁচিয়া আছেন