পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৬
জয়তু নেতাজী

ঊনবিংশ শতাব্দী ধরিয়া তাহার আয়ােজন চলিয়াছিল―আজিকার বাঙালী সে কথা ভুলিয়াছে; “বাংলার নবযুগ” নামক গ্রন্থে আমি সে কাহিনী সবিস্তারে বলিয়াছি। বঙ্কিমচন্দ্র যে জাতীয়তা-মন্ত্র প্রচার করিয়াছিলেন, তাহাতে একটা বিশিষ্ট সমাজ ও বিশিষ্ট আদর্শকে সম্মুখে রাখিলেও, তাঁহার দৃষ্টি ছিল সার্ব্বভৌমিক ভারতীয় দৃষ্টি―নবযুগের এই নব-ধর্ম্মের আদি প্রচারক তিনিই। এই জাতীয়তা-ধর্ম্ম স্বামী বিবেকানন্দের ধ্যান-দৃষ্টিতে আরও বিশুদ্ধ ও গভীর হইয়া উঠে,―জাতির হৃদয়ে তিনিই প্রকৃত ‘মহাভারতে’র বীজ বপন করেন। তারপর রবীন্দ্রনাথও তাঁহার কবি-জীবনে ভারতীয় ভাব-সাধনার অত্যুচ্চ শিখর কখনও ত্যাগ করেন নাই, বাঙালী হইয়াও তিনি খাঁটি ভারতীয় কবি―ভারতের আদর্শ ই তাঁহার বাঙালীত্বকে তৃপ্ত করিয়াছে। তাই আজ সেই যুগব্যাপী সাধনার ফলস্বরূপ আমরা যাহা প্রত্যক্ষ করিতেছি তাহার মূল যে এই বাংলার মাটিতেই নিহিত থাকিবে, তাহা আশ্চর্য্যের বিষয় নহে; এবং একজনের কল্পনায় ও অপরের জীবনে উহা যে একই রূপ ধারণ করিয়াছে তাহাতে ইহাই প্রমাণিত হয় যে, বাঙালী ভুল করে নাই―তাহার সেই সাধনা মিথ্যা নহে। তথাপি, বাস্তবে ও কল্পনায় এই যে সাদৃশ্য, ইহার কারণ আরও গভীর―প্রবন্ধের ভূমিকায় আমি সেই কথাই বলিয়াছি।

 রবীন্দ্রনাথ এই কবিতাটি (‘গুরু গােবিন্দ’―মানসী) রচনা করিয়াছিলেন―ভারতের ইতিহাস-প্রসিদ্ধ এক বীরের জীবনকে