পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
স্বামীজী ও নেতাজী
২৫

 “ওগাে নাথ, ওগো প্রভু! তুমিও আমার কলঙ্কের দিকটাই দেখিও না, তোমার চক্ষে যে সব সমান! যে-লৌহ দেবমন্দিরে বিগ্রহের দেহে স্থান পায়―মাংসবিক্রেতা কসাইয়ের ছুরিতেও যে তাহাই রহিয়াছে। কিন্তু পরশমণির স্পর্শে দুই-ই ত’ শােনা হইয়া যায়! তবে কেন তুমি আমার পাপটাই দেখিতেছ? হে নাথ! হে প্রভু! তােমার চক্ষে যে সব সমান!

 একই বৃষ্টিবিন্দু যমুনার জলে বা পথিপার্শ্বের অপবিত্র পয়ঃপ্রণালীতে পড়ে, কিন্তু সেই জল গঙ্গায় মিশিলে উভয়ই সমান পবিত্র হইয়া যায়। ওগাে নাথ! ওগো প্রভু! তুমি আমার কলঙ্কটাই দেখিও না―তােমার চক্ষে যে সব সমান!”

 বাইজীর মুখে ঐ সুরে ঐ গান শুনিয়া স্বামীজীর মনে কি হইয়াছিল, তাহা অনুমান করা কঠিন নহে। আর কোন্ দেশে ঐ শ্রেণীর নারীর মুখে মুহূর্ত্তের জন্যও এমন দিব্যভাব ফুটিয়া উঠে? এমন সহজলব্ধ ভাবাবেশ এজাতির বহুকালাগত সাধনার পরিচায়ক নহে কি? স্বামীজীর মত মহাভাবের ভাবুক, অতিউচ্চ অধ্যাত্ম-পন্থী সাধককেও এই দেশ ও এই জাতি কেন যে এত মুগ্ধ করিয়াছিল―তাহার বর্ত্তমান দুর্দ্দশা তাঁহাকে কেন যে এমন অভিভূত করিয়াছিল, আমি সংক্ষেপে তাহার একটু আভাস দিলাম।

 একদিকে এই ভারত―ভারতের হীনতম দীনতম নরনারীর মধ্যে প্রাণ ও প্রতিভার ঐ ভস্মাচ্ছন্ন বহ্নি, এবং সে সম্বন্ধে সকল সংশয়ের তিরােধান; অপরদিকে সেকালের একমাত্র ভরসা―