পাতা:জাতক (প্রথম খণ্ড) - ঈশানচন্দ্র ঘোষ.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৫-তীর্থ-জাতক। (( পুরাকালে বারাণসীরাজ ব্ৰহ্মদত্তের সময় এক বার সাতজন রাজা মিলিত হইয়া তাহার রাজধানী অবরোধ করিয়াছিলেন। ব্ৰহ্মদত্তের একজন রখী নিজের রথে একই অশ্বীর গৰ্ভজাত দুইটী সৈন্ধব ঘোটক সংযোজিত করিয়া নগর হইতে নিশ্রুমণ পূর্বক একে একে বিপক্ষদিগের ছয়টীি বলপ্ৰকোষ্ঠ ভেদ করেন এবং ছয় জন রাজাকে বন্দী করিয়া আনেন। ঠিক এই সময়ে জ্যেষ্ঠ ঘোটকটী আহত হয়। তখন রখী রাজদ্বারে প্রতিগমনপুৰ্ব্বক তাহাকে রথ হইতে খুলিয়া দেন এবং সে এক পাশ্বে ভর দিয়া শয়ন করিলে তাহার শরীর হইতে বৰ্ম্মাদি উন্মোচনপুর্বক অপর একটী অশ্বকে সজিত করিতে আরম্ভ করেন। তদৰ্শনে আহত অশ্বরূপী বোধিসত্ত্ব, ভোজাজনেয় জাতকে যেরূপ বৰ্ণিত হইয়াছে সেইরূপ চিন্তা করিয়া রাখীকে আহবানপুৰ্ব্বক এই গাথা পাঠ করিলেনঃ যেথা সেথা সর্বস্থানে, যখন তখন ख्वांख्icना कब्र निख दीर्षJथार्थन । ইতার ঘোটক যারা, কি সাধ্য তাদের বিপদ সংস্কুল স্থানে তিষ্ঠিত রণের ? এই কথা শুনিয়া রাখী বোধিসত্ত্বকে ধরিয়া তুলিলেন, তাহাকে পুনৰ্ব্বার রথে সংযোজন পূর্বক সপ্তক বলপ্ৰকোষ্ঠ ভেদ করিলেন, সপ্তম রাজাকে বন্দী করিয়া রাজদ্বারে প্রত্যাবৰ্ত্তন করিলেন এবং সেখানে বোধিসত্ত্বকে বন্ধনমুক্ত করাইয়া,দিলেন। অনন্তর বোধিসত্ত্ব একপাশ্বে ভর দিয়া শয়ন করিলেন এবং ভোজাজনেয় জাতকে যেরূপ বৰ্ণিত হইয়াছে সেই ভাবে রাজাকে উপদেশ দিতে দিতে প্ৰাণত্যাগ করিলেন। , রাজা তাহার শরীরীকৃত্য সম্পাদনপূর্বক রথীকে নানা সম্মানে ভূষিত করিলেন এবং যথাধৰ্ম্ম প্ৰজাপালন পূর্বক কৰ্ম্মানুরূপ ফলভোগার্থ লোকান্তরে চলিয়া গেলেন । -- [ কথান্তে শান্ত সত্যব্যাখ্যা করিতে লাগিলেন ; তাহা শুনিয়া ঐ ভিক্ষু অৰ্হত্ত্ব লাভ করিলেন। সমবধান-তখন স্থবির আনন্দ ছিল রাজা ব্ৰহ্মদত্ত এবং সম্যকসম্বুদ্ধ ছিলেন। সেই জ্যেষ্ঠ অশ্ব । ] , ac-ré2-sriszts এক ব্যক্তি পুর্বে স্বর্ণকারের ব্যবসায় করিত ; পরে প্রব্রাজ্য-গ্ৰহণপূর্বক: ধৰ্ম্মসেনাপতি সারীপুত্রের সাৰ্দ্ধবিহারিক * ভাবে বাস করিত। তাহাকে লক্ষ্য করিয়া শাস্তা জেতবনে এই কথা বলিয়াছিলেন । পরের চিত্ত, পরের মনোভাব বুঝিবার ক্ষমতা কেবল বুদ্ধদিগের পক্ষেই সম্ভব। ধৰ্ম্মসেনাপতির এ ক্ষমতা ছিল না ; তিনি সাৰ্দ্ধবিহারিকের চিত্ত জানিতে পারেন নাই ; কাজেই তাহাকে ধ্যানশিক্ষা দিবার উদ্দেশ্যে প্রথমে “অশুভ” অর্থাৎ দেহের অপবিত্ৰত চিন্তা করিতে উপদেশ দিয়াছিলেন। + কিন্তু ইহাতে ঐ ভিক্ষুর কিছুমাত্র উপকার হয় নাই। না হইবারই কথা, কারণ, সে নাকি একাদিক্ৰমে পাঁচ শতবার স্বর্ণকারই হইয়া জন্মগ্রহণ করিয়াছিল ; কাজেই এত দীর্ঘকাল বিশুদ্ধ-সুবর্ণদর্শনের সঞ্চিত-ফলে তাহার পক্ষে “অশুভ' চিন্তা কাৰ্য্যকারী হইল না। সে চারিমাসকাল “অশুভ” চিন্তা করিয়াও ইহার কোন মৰ্ম্ম বুঝিতে পারিল না। নিজের সাৰ্দ্ধবিহারিকের অৰ্হত্ত্ব-সম্পাদনে অসমর্থ হইয়া ধৰ্ম্মসেনাপতি ভাবিতে লাগিলেন, “এরূপ লোক, দেখিতেছি, বুদ্ধ ব্যতীত আর কাহারও নিকট শিক্ষালাভ করিতে পারে না। অতএব আমি ইহাকে বুদ্ধের নিকটই • লইয়া যাই।” ইহা স্থির করিয়া তিনি পরদিন প্ৰত্যুষে সেই ভিক্ষুকে সঙ্গে লইয়া শাস্তার সকাশে উপনীত হইলেন। শান্ত জিজ্ঞাসা করিলেন “কি হে সারীপুত্র! তুমি এই ভিক্ষুকে লইয়া আসিলে কেন ?" সারীপুত্র বলিলেন, "প্ৰভু, আমি এই ব্যক্তিকে একটী কৰ্ম্মস্থান নির্দেশ করিয়া দিয়াছিলাম ; কিন্তু চারিমাস কাল চেষ্টা করিয়াও এ তাহার কিছুমাত্ৰ মৰ্ম্মোদঘাটন করিতে পারিল না। তাই ইহাকে আপনার নিকট ; লইয়া আসিলাম, কারণ, বুদ্ধ ব্যতীত আর কেহই ইহার শিক্ষাবিধানে সমর্থ নহে। “ইহাকে তুমি কি কৰ্ম্মস্থান দিয়াছিলে, সারীপুত্ৰ ?” “আমি ইহাকে "অশুভ’ ভাবিতে বলিয়াছিলাম।” “সারীপুত্র! অপরের চিত্ত

  • সাৰ্দ্ধ বিহারিক-যে এক সঙ্গে একই বিহারে বাস করে। স্থবিরদিগের শিষ্যগণ এই নামে অভিহিত হইত। * দশবিধ “অশুভ” সম্বন্ধে ৯ম পৃষ্ঠের টীকায় “কৰ্ম্মস্থান” দ্রষ্টব্য।