পাতা:জাতক (প্রথম খণ্ড) - ঈশানচন্দ্র ঘোষ.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩১-কুলায়ক-জাতক। ve ঐ রূপে পরিষ্কার করিলেন । এবারও আর এক ব্যক্তি র্তাহার সেই স্থানে আসিয়া দাড়াইল । এইরূপে তিনি সমবেত প্ৰত্যেক লোকেরই সুবিধার জন্য তাহদের দাড়াইবার স্থান পরিষ্কার করিয়া দিলেন । ل আর একবার বোধিসত্ত্ব লোকের সুবিধার জন্য প্ৰথমে একটী মণ্ডপ এবং শেষে উহাও ভাঙ্গিয়া ফেলিয়া একটা ধৰ্ম্মশালা নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। সেখানে লোকের বসিবার জন্য আসন এবং পানাৰ্থ জলপূর্ণ ভাণ্ড থাকিত। অতঃপর বোধিসত্ত্বের প্রযত্নে ঐ গ্রামবাসী সমস্ত পুরুষ তাহারই ন্যায় পরোপকার-পরায়ণ হইল ; তাহারা পঞ্চশীল-সম্পন্ন হইয়া তাহার সঙ্গে সৎকাৰ্য্য সম্পাদন করিতে লাগিল। তাহারা প্ৰত্যুষে শয্যাত্যাগ করিত, বাসী, কুঠার, মুদগর প্রভৃতি হন্তে লইয়া বাহির হইত, রাস্তায় যে সকল ইট পাটুকেল দেখিতে পাইত সেগুলি দূরে সরাইয়া ফেলিত, রাস্তার ধারে কোন গাছে গাড়ীর চাকা আটকাইয়া যাইতেছে দেখিলে তাহা কাটিয়া দিত, অসমান স্থান সমান করিত, সেতু প্ৰস্তুত করিত, পুষ্করিণী খনন করিত, ধৰ্ম্মশালা নিৰ্ম্মাণ করিত, দানাদি পুণ্যকৰ্ম্ম করিত, এবং বােধিসত্ত্বের উপদেশানুসারে শীলাব্রত পালন করিত। - 勉, একদিন গ্রামের মণ্ডল চিন্তা করিতে লাগিল, “যখন এই সকল লোকে মদ খাইয়া মারামারি কাটাকাটি করিত, তখন মদের শুন্ধে এবং লোকের যে অর্থদণ্ড হইত। তদারা আমার বেশ আয় হইত। কিন্তু এখন এই মঘী মাণবিক ইহাদিগকে শীলাব্রত শিক্ষা দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়াছে বলিয়া নরহত্যা প্লভৃতি অপরাধ উঠিয়া গিয়াছে।” এই ভাবিতে ভাবিতে সে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হইয়া বলিল, “আচ্ছা, আমি ইহাদিগকে শীলাব্রত দেখাইতেছি।” অনন্তর ঐ মণ্ডল রাজার নিকট গিয়া বলিল, “মহারাজ, গ্ৰামে একদল ডাকাত জুটিয়াছে; তাহারা লুণ্ঠপট ও অন্যান্য উপদ্ৰব করিয়া বেড়াইতেছে।” রাজা বলিলেন, “তাহাদিগকে ধরিয়া আন ।” তখন সে বোধিসত্ত্ব ও তাহার অনুচরদিগকে বন্দী করিয়া রাজার নিকট উপনীত হইল। রাজা কিছুমাত্ৰ অনুসন্ধান না করিয়া আদেশ দিলেন, “ইহাদিগকে হস্তিপদতলে মাদিত কর।” রাজভূত্যেরা বন্দী দিগকে প্রাসাদের পুরোবৰ্ত্তী প্ৰাঙ্গণে লইয়া গেল এবং সেখানে তাহাদের হাত পা বান্ধিয়া ভূমিতে ফেলিয়া রাখিল। অনন্তর তাহার হাতী আনিতে পাঠাইল । বোধিসত্ত্ব র্তাহার সঙ্গীদিগকে বলিতে লাগিলেন, “স্রাতৃগণ, শীলব্রতের কথা ভুলিও না ; শিশুনকারক,* রাজা ও হস্তী সকলেই আমাদের নিকট আত্মবৎ প্রীতির পাত্র এই কথা मgन ब्राथि७ ।” এ দিকে তঁহাদিগকে মন্দিত করিবার জন্য হস্তী আনীত হইল ; কিন্তু মাহুত পুনঃপুনঃ চেষ্টা করিয়াও উহাকে বন্দীদিগের নিকটে লাইতে পারিল না ; হস্তী বন্দী দিগকে দেখিবামাত্ৰই বিকট রব করিতে করিতে পলায়ন করিল। তাহার পর একটা একটা করিয়া আরও হাতী আনা হইল, কিন্তু তাহারাও পলাইয়া গেল । রাজা ভাবিলেন, বন্দীদিগের নিকট হয়ত এমন কোন ঔষধ আছে, যাহার গন্ধে হাতীগুলা উহাদের কাছে যাইতে পরিতেছে না । কিন্তু অনুসন্ধান করিয়া কাহারও নিকট কোন ঔষধ পাওয়া গেল না । তখন রাজার মনে হইল, সম্ভবতঃ ইহার কোন মন্ত্র জানে ; তিনি ভূত্যাদিগকে বলিলেন, জিজ্ঞাসা কর ত, ইহারা কোন মন্ত্র জানে কি না । ভূত্যেরা জিজ্ঞাসা করিলে বেধিসত্ত্ব বলিলেন,-“হা, আমরা মন্ত্র জানি বটে ।” ভূত্যের রাজাকে এই কথা জানাইলে তিনি বন্দী দিগকে নিকটে আনাইয়া বলিলেন, “কি মন্ত্র জান বল ।” যে ঈৰ্য্যাপারায়ণ হইয়া কাহারও নিন্দ করে বা কাহারও নামে অভিযোগ করে।