পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৬
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ

আমরা অন্ন পাইব না এবং আমরা কি কারণে—কেমন করিয়া যে মরিতেছি তাহা জানিতেও পারিব না। আজ যাহাদিগকে বাঁচাইতে চাই, তাহাদিগকে মিলাইতে হইবে।”

 দেশের যুবকদিগকে এই গঠনমূলক কার্যের ভার গ্রহণ করিবার জন্য আহ্বান করিয়া তিনি বলিয়াছিলেন,—

 “তোমরা যে পার এবং যেখানে পার একটি গ্রামের ভার গ্রহণ করিয়া সেখানে গিয়া আশ্রয় লও।.........এই কার্যে খ্যাতির আশা করিবে না; এমন কি গ্রামবাসীদের নিকট হইতে কৃতজ্ঞতার পরিবর্তে বাধা, অবিশ্বাস স্বীকার করিতে হইবে। ইহাতে কোন উত্তেজনা নাই, কোন বিরোধ নাই, কোন ঘোষণা নাই; কেবল ধৈর্য ও প্রেম এবং নিভৃতে তপস্যা —মনের মধ্যে কেবল এইটুকুমাত্র পণ যে দেশের মধ্যে সকলের চেয়ে যাহারা দুঃখী, তাহাদের দুঃখের ভাগ লইয়া সেই দুঃখের মূলগত প্রতিকার সাধন করিতে সমস্ত জীবন সমর্পণ করিব।”

 দুঃখের বিষয়, দেশের যুবক সম্প্রদায় তাঁহার সেই নীরব কর্মসাধনার আহ্বানে তখন সাড়া দেন নাই; দিলে বাঙলা দেশের চেহারা ফিরিয়া যাইত, স্বদেশী আন্দোলনের প্রবল বন্যায় রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যে শক্তি সঞ্চিত হইয়াছিল, তাহাকে এইরূপ গঠনমূলক কাজের মধ্য দিয়া পরিচালিত করিলে জাতি শক্তিমান হইত এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য আমরা অধিকতর প্রস্তুত হইতে পারিতাম। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্যক্রমে তাহা হইল না। ফলে জোয়ারের জল যখন কমিয়া গেল, সাময়িক