বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উপসংহার
১০৩

কিন্তু সভায় নির্দিষ্ট সময়ের পূর্ব হইতেই টাউন হলে এরূপ বিপুল জনসমাগম হইতে থাকে যে, সেখানে সভা করা অসম্ভব হইয়া উঠে। অবশেষে গড়ের মাঠে অক্টারলোনী মনুমেণ্টের নীচে সভা করা হইল। রবীন্দ্রনাথ সেখানে যে বক্তৃতা করেন বহু দিন তাঁহার কণ্ঠে সেরূপ তীব্র আবেগময় বক্তৃতা শুনি নাই। তিনি যেন সমগ্র বাঙালী জাতির ক্ষোভ ও মর্মবেদনাই তাঁহার অননুকরণীয় ভাষার মধ্য দিয়া ব্যক্ত করিয়াছিলেন।

 মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন রবীন্দ্রনাথ সমর্থন করিতে পারেন নাই, বরং কলিকাতা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটে “শিক্ষার মিলন” ও “সত্যের আহ্বান” নামে পর পর দুইটি বক্তৃতা করিয়া তিনি গান্ধীজীর অবলম্বিত পন্থার তীব্র প্রতিবাদ করেন। কিন্তু মহাত্মা গান্ধীর প্রতি তাঁহার শ্রদ্ধা ও ভালবাসা কিছুমাত্র হ্রাস হয় নাই। ১৯৩২ সালে মহাত্মাজী যখন সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারার প্রতিবাদে আমরণ অনশন বরণ করেন, তখন রবীন্দ্রনাথ অত্যন্ত বিচলিত হইয়া পড়িয়াছিলেন। তিনি এইজন্য গভীর বেদনা প্রকাশ করিয়া শাস্তিনিকেতনে কয়েকটি বক্তৃতা করেন এবং পুণার যারবেদা জেলে গিয়া গান্ধীজীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। গান্ধীজী রবীন্দ্রনাথের সম্মুখেই অনশন ভঙ্গ করেন।

 ইহার পর মহাত্মা গান্ধী এবং তাঁহার নেতৃত্বে কংগ্রেস সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা সম্বন্ধে যে ‘না গ্রহণ না বর্জন’ নীতি অবলম্বন করিয়াছিলেন, তাহার ফল দেশের পক্ষে ঘোর