বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ

অনিষ্টকর হইয়াছে। বিভিন্ন প্রদেশের নেতারা, বিশেষ করিয়া বাঙলাদেশের নেতারা সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা তথা কংগ্রেসের এই ‘না গ্রহণ না বর্জন’ নীতির তীব্র বিরোধিতা করেন। রবীন্দ্রনাথও তাঁহাদের সঙ্গে যোগ দেন। ১৯৩৬ সালে কলিকাতা টাউন হলে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারার প্রতিবাদ করিবার জন্য যে বিরাট জনসভা হয়, রবীন্দ্রনাথই তাহার সভাপতিত্ব করেন। রবীন্দ্রনাথের স্বাস্থ্য তখন ভাল ছিল না। বক্তৃতার প্রারম্ভে তিনি বলেন, “আমাদের পক্ষে ইহার (বাঁটোয়ারার) অপমান এমন দুর্বিসহ যে, বার্ধক্য ও স্বাস্থ্যহীনতার অজুহাত দেখাইতে আমি লজ্জাবোধ করিলাম এবং আমার চিরপ্রিয় নির্জনতা পরিত্যাগ করিয়া সাবধান বাণী উচ্চারণ করিতে আসিলাম।”

 সভায় এত বেশী ভীড় হইয়াছিল যে, রবীন্দ্রনাথ বিশেষ কষ্ট অনুভব করিতে থাকেন। সৌভাগ্যক্রমে তাঁহার চিকিৎসক স্যার নীলরতন সরকার তাঁহার পার্শ্বে ই ছিলেন। বক্তৃতা করিবার সময় রবীন্দ্রনাথ যাহাতে অক্সিজেন বাষ্প গ্রহণ করিতে পারেন, সে ব্যবস্থা তিনি করেন। বার্ধক্য ও স্বাস্থ্যহীনতা সত্ত্বেও রবীন্দ্রনাথ যে সেদিন তাঁহার কর্তব্য পালনে পশ্চাদ্‌পদ হন নাই, ইহা তাঁহার গভীর স্বদেশপ্রেমেরই নিদর্শন।

 সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারার প্রতিবাদ করিয়া রবীন্দ্রনাথ যে সাবধান বাণী উচ্চারণ করিয়াছিলেন, গত কয়েক বৎসরে