বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৬
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ

পরিণামে তাহাদেরও কোন মঙ্গল হইবে না। আমরা, যাহারা এক জন্মভূমির সন্তান, সভ্য জাতিস্বরূপ অস্তিত্ব বজায় রাখিবার জন্য, এমন কি, আত্মরক্ষার জন্য তাহাদের উচিত পরস্পরের সহিত বন্ধুত্ব স্থাপন করা, উভয় সম্প্রদায়েরই ক্ষোভের কারণ ও প্রলোভন সম্পূর্ণ উপেক্ষা করিয়া দেশ ও বিদেশের তাহাদিগকেই উপেক্ষা করা উচিত, যাহারা তাহাদের বন্ধুত্বের পথে কণ্টক স্থাপন করে।......

 “এই অন্যায় অনুগ্রহের যে একটা নিশ্চিত প্রতিক্রিয়া আছে, তাহাই চিন্তার বিষয়; কারণ একদিন আসিবে যেদিন আর এইরূপ অনুগ্রহ করা সম্ভব হইবে না, যে দিন এক তরফা আব্দার পালনে স্বেচ্ছাচারীরও চক্ষুলজ্জা হইবে; অথচ সেই দিনও অন্যায় অনুগ্রহ লাভের আকাঙ্ক্ষা পরিতৃপ্ত হইবে না।”...

 ব্রিটিশ শাসকদিগকে লক্ষ্য করিয়া তিনি বলেন,—

 “যাঁহারা ইউরোপের বর্তমান পরিস্থিতি লক্ষ্য করিয়াছেন, তাঁহারাই জানেন, কোন দেশের অধিবাসীদিগকে সাময়িক কালের জন্য নিস্তেজ করিয়া ফেলিয়া অপমানের বোঝা শিরে বহিতে বাধ্য করা যায় বটে কিন্তু তাহাদিগকে চিরতরে তাহা মানিয়া লইতে বাধ্য করা যায় না। শীঘ্রই হউক, আর বিলম্বেই হউক, ঐ অপমান প্রতিনিক্ষিপ্ত হয় এবং উহার বিষ চতুর্দিকে ব্যাপ্ত হয়।”

 রবীন্দ্রনাথের স্বদেশপ্রেমের আর একটা দিকের কিছু পরিচয় দিয়া আমরা এখন এই আলোচনা শেষ করিব।