বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উপসংহার
১০৯

তাহার মূল সূত্র আমাদের দেশে অনুসৃত হইলে জাতির কল্যাণ হইবে, এই বিশ্বাস তাঁহার হইয়াছিল। রাশিয়ার চিঠিতে একথা তিনি স্পষ্টভাবেই লিখিয়াছিলেন।

 ১৯৩২—পারস্য ও ইরাক। ৭১ বৎসর বয়সে কবি বিমানযোগে এই দুই দেশ ভ্রমণ করেন। ইহাতে তাঁহার অসাধারণ মানসিক বলেরই পরিচয় পাওয়া যায়।

 আধুনিক সভ্য জাতিদের ঘোর বর্ণবিদ্বেষ, স্বার্থপরতা ও পররাজ্য-লোলুপতা এবং পাশ্চাত্য বৈজ্ঞানিক সভ্যতার ধ্বংসকারী প্রবৃত্তি ও আত্মহত্যাকর নীতি দেখিয়া রবীন্দ্রনাথ জীবনের অপরাহ্ণে অত্যন্ত বেদনা পাইয়াছিলেন এবং মানব জাতির ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে উদ্বিগ্ন হইয়াছিলেন। কিন্তু ১৯৩৬ সালেও মানব প্রকৃতির অন্তর্নিহিত মহত্ত্বের উপর তিনি একেবারে বিশ্বাস হারান নাই। কলিকাতা টাউন হলে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারার বিরুদ্ধে তিনি যে বক্তৃতা করেন, তাহাতেও বিশেষভাবে ইংরাজ জাতিকে লক্ষ্য করিয়া তিনি বলিয়াছিলেন,—

 “এখনো মানবতার আদর্শের প্রতি পাশ্চাত্যের মজ্জাগত আকর্ষণ বিষয়ে আমার মনে দৃঢ় আস্থা বিদ্যমান। এইজন্যই আমাদিগকে আষ্টে পৃষ্ঠে বাঁধিয়া ফেলিবার জন্য, ভবিষ্যৎ প্রগতির পথে আমাদের গতিকে চিরতরে পঙ্গু করিয়া ফেলিবার জন্য সুকৌশলী রাজনীতিকের দৃঢ় ফাঁদের বেষ্টন নিজেদের আশে পাশে যদিও অনুভব করিতে পারিতেছি, তথাপি আমি