ঊনবিংশ শতাব্দীর ষষ্ঠ দশকেই ম্যাটসিনি, গ্যারিবল্ডি ও কাভুরের অক্লান্ত চেষ্টার ফলে ইটালী বহুকাল পরে অস্ট্রিয়ার দাসত্ব হইতে মুক্ত হইয়া স্বাধীনতা লাভ করিয়াছিল। এই সময়েই আমেরিকার ক্রীতদাসেরা মানবকল্যাণকামীদের আন্দোলনের ফলে মুক্তিলাভ করিয়াছিল এবং ক্রীতদাসপ্রথা চিরদিনের জন্য লোপ পাইয়াছিল। বহির্জগতের এই সব আন্দোলনের তরঙ্গ বাঙলা দেশের শিক্ষিত সমাজের মনের উপর আসিয়া প্রবলভাবে আঘাত করিয়াছিল। তাহার ফলে সাহিত্যের বিকাশ, জাতীয়তার আন্দোলন, সমাজ-সংস্কার ও ধর্ম-সংস্কারের আন্দোলন—জাতীয় জীবনের সমস্ত দিকেই তখন জাগরণের সাড়া পড়িয়া গিয়াছিল। বাঙলা দেশ সমস্ত ভারতবর্ষে শীর্ষস্থান অধিকার করিয়াছিল এবং সকল দিকেই অগ্রগামী ও পথপ্রদর্শক হইয়াছিল। একথা আমরা গর্ব করিয়া বলিতেছি না। ইহা খাঁটি সত্য কথা এবং কিছুদিন পূর্বেও সকলেই স্বীকার করিত। দুর্ভাগ্যক্রমে বর্তমানে কেহ কেহ উহাকে আমাদের বৃথা-গর্ব বলিয়া মনে করেন। প্রায় দুই বৎসর পূর্বে সিমলা-শৈলে একটি সভায় অন্যতম কংগ্রেসনেতা শ্রীযুক্ত ভুলাভাই দেশাই বক্তৃতা প্রসঙ্গে বলেন, “১৯২০ সালে মহাত্মা গান্ধীর আবির্ভাবের পর হইতে ভারতবর্ষে সত্যকার স্বাধীনতা আন্দোলনের উদ্ভব হয়।” তৎপূর্বে বাঙলা দেশে যে স্বাধীনতা আন্দোলন হইয়াছে অথবা বাঙলা সাহিত্যে কেহ যে স্বাধীনতার কথা বলিয়াছেন, তাহা তিনি স্বীকার করেন নাই। শ্রীযুক্ত
পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/১৬
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ