ভুলাভাই দেশাই-এর মত একজন ভারতবিখ্যাত নেতার যে এইরূপ অজ্ঞতা থাকিতে ও ভ্রান্ত ধারণা হইতে পারে, ইহা অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ হইতেই জাতীয় আন্দোলনের ভাবধারা, স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা বাঙলা সাহিত্যকে প্লাবিত করিয়াছিল। তখনকার অনেক বিশ্রুতকীর্তি কবি, মনীষী ও সাহিত্যিক বাঙলার জাতীয় জীবনের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হইয়া আছেন।
সিপাহী-যুদ্ধের পর দেশে যে একটা নূতন ভাবের সঞ্চার হইয়াছিল, বাঙলা দেশের কবি ও সাহিত্যিকদের মনেই তাহা সর্বপ্রথম প্রতিধ্বনি তুলিয়াছিল। মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর কাব্য ‘মেঘনাদবধ’ কেবল মিত্রাক্ষর ছন্দের শৃঙ্খল ভঙ্গ করিয়া বিদ্রোহের পরিচয় দেয় নাই, ঐ কাব্যের আগাগোড়া স্বাধীনতার একটা দুর্দমনীয় আকাঙ্ক্ষা অন্তঃসলিলা ফল্গুর মত প্রবাহিত হইয়া চলিয়াছে। এই সময়েই কবি রঙ্গলাল তাঁহার ‘পদ্মিনী” কাব্যে তূর্যধ্বনি করিয়াছেন,—
স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় রে,
কে বাঁচিতে চায়,
দাসত্ব-শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় রে
কে পরিবে পায়।
দিনেকের স্বাধীনতা স্বর্গসুখ তায় রে,
স্বর্গসুখ তায়।