হইয়া থাকিবে। তখনকার দিনে বাঙলার জাতীয়তাবাদীদের স্বাধীনতার স্বপ্ন রাজনারায়ণ বসুর লেখনীমুখেই ব্যক্ত হইয়াছিল,—“আমি দেখিতেছি আমার সম্মুখে মহাবলপরাক্রান্ত হিন্দুজাতি নিদ্রা হইতে উত্থিত হইয়া বীরকুণ্ডল পুনরায় স্পন্দন করিতেছে এবং দেববিক্রমে উন্নতির পথে ধাবিত হইতে প্রবৃত্ত হইতেছে। আমি দেখিতেছি যে, এই জাতি পুনরায় নবযৌবনান্বিত হইয়া পুনরায় জ্ঞান, ধর্ম ও সভ্যতাতে উজ্জ্বল হইয়া পৃথিবীকে সুশোভিত করিতেছে; হিন্দুজাতির কীর্তি, হিন্দু জাতির গরিমা পৃথিবীময় পুনরায় বিস্তারিত হইতেছে। এই আশাপূর্ণ হৃদয়ে ভারতের জয়োচ্চারণ * * * করিতেছি।”
এইরূপে অনুকূল পরিবেশের মধ্যে রবীন্দ্রনাথের কৈশোর জীবন আরম্ভ হইল। ঘরে-বাহিরে সর্বত্র জাতীয় ভাবের সংস্পর্শে আসিবার সুযোগ তিনি লাভ করিলেন। বাঙলার আকাশে-বাতাসে তখন যে স্বদেশপ্রেম ও জাতীয় ভাবের আগমনবার্তা ঘোষিত হইতেছিল, কিশোর রবীন্দ্রনাথের জীবনে তাহারই মধ্যে স্বাদেশিকতা ও জাতীয়তা মুকুলিত হইয়া উঠিল।