পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ

মুখোপাধ্যায়, যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ, রাজকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়, সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, চন্দ্রনাথ বসু, রজনীকান্ত গুপ্ত, রামদাস সেন, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী প্রভৃতি স্বনামধন্য কবি, মনীষী ও সাহিত্যিকেরা বঙ্কিম-মণ্ডলের অন্তর্ভুক্ত। এই সৌরমণ্ডলের বঙ্কিমচন্দ্র ছিলেন সূর্য, আর অন্য সকলে জ্যোতিষ্মান গ্রহ। বাঙলার স্বদেশপ্রেম ও জাতীয়তার উদ্বোধনে ইঁহাদের দানের তুলনা নাই। বঙ্কিমচন্দ্রের ন্যায় ইঁহারা সকলেই ছিলেন আত্মশক্তির সাধক—ভিক্ষা-নীতির ঘোর বিরোধী। ইঁহাদের মধ্যে যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণের নাম বিশেষভাবে স্মরণীয়। স্বদেশপ্রেম ও স্বজাতিপ্রীতির উদ্বোধনই ছিল তাঁহার সাহিত্যসৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য। ম্যাটসিনি ও গ্যারিবল্ডির জীবনী, স্বাধীনতাকামী রাজপুত বীরদের জীবন-কাহিনী, এবং বহু স্বদেশ-প্রেমোদ্দীপক প্রবন্ধ প্রভৃতি লিখিয়া তিনি স্বজাতির মনে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন।

 বঙ্কিমচন্দ্রের “বন্দে মাতরম”-মন্ত্র সাহিত্যক্ষেত্রে তিনিই বোধ হয় প্রথম প্রয়োগ করেন। ১৮৯০ খৃঃ তিনি গ্যারিবল্ডির জীবনবৃত্ত প্রকাশ করেন। ঐ গ্রন্থের “উদ্বোধনী”র শেষে তিনি লিখিয়াছিলেন—“এস আর দেরী করিও না। সময় আসিয়াছে!! গগন বিদারিয়া গাও “বন্দে মাতরম্”—স্বদেশানুরাগ ভগদ্ভক্তির সহিত মিশ্রিত হইয়া ভারতে আবার নবযুগের উৎপত্তি করুক!!!”

 স্বদেশপ্রেমিক প্রত্যেক বাঙালী যুবকের যোগেন্দ্রনাথ