বিষয়ে তিনি ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্রেরই যোগ্য শিষ্য। বঙ্কিমচন্দ্র সাহিত্য-শিষ্য হিসাবে তরুণ রবীন্দ্রনাথের গলায় নিজের মালা পরাইয়া দিয়াছিলেন। কিন্তু কেবল তাহাতেই বঙ্কিমচন্দ্র সন্তুষ্ট হন নাই। রবীন্দ্রনাথকে আত্মশক্তির সাধনাতেও তিনি দীক্ষা দিয়াছিলেন। তরুণ রবীন্দ্রনাথ বঙ্কিমচন্দ্রের প্রিয়পাত্র ছিলেন এবং প্রায়ই তাঁহার নিকট যাইতেন। এই বিরাট ব্যক্তিত্বের সংস্পর্শে আসিয়া রবীন্দ্রনাথের চিত্তে যে স্বদেশপ্রেম ও জাতীয়ভাবের বিকাশে যথেষ্ট সহায়তা হইয়াছিল, তাহাতে সন্দেহ নাই।
১৮৯২ সালে ‘সাধনা’ পত্র প্রকাশিত হয় এবং সুধীন্দ্রনাথ ঠাকুর নামে সম্পাদক থাকিলেও প্রকৃতপক্ষে রবীন্দ্রনাথ উহার সম্পাদনের ভার গ্রহণ করেন। ইহা তাঁহার জীবনের একটি প্রধান ঘটনা। এই ‘সাধনা’ পত্রে রবীন্দ্রনাথের বহু সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রবন্ধ, জাতীয়ভাবপূর্ণ কবিতা ও গল্প প্রকাশিত হয়। তাঁহার বিখ্যাত কবিতা ‘এবার ফিরাও মোরে’ এই ‘সাধনা’তেই প্রকাশিত হয়।
“কী গাহিবে কী শুনাবে। বল মিথ্যা আপনার সুখ,
মিথ্যা আপনার দুঃখ। স্বার্থমগ্ন যেজন বিমুখ,
বৃহৎ জগৎ হতে, সে কখনো শেখেনি বাঁচিতে।
মহাবিশ্বজীবনের তরঙ্গেতে নাচিতে নাচিতে
নির্ভয়ে ছুটিতে হবে, সত্যেরে করিয়া ধ্রুবতারা।
মৃত্যুরে না করি শঙ্কা। দুর্দিনের অশ্রুজলধারা;