বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ

পারিবে না। রুদ্ধবাক, সংবাদপত্রের মাঝখানে রহস্যান্ধকারে আচ্ছন্ন হইয়া থাকা আমাদের পক্ষে বড়ই ভয়ঙ্কর অবস্থা।”

 ৪৪ বৎসর পূর্বে রবীন্দ্রনাথ যে “ভয়ঙ্কর অবস্থা”র কথা লিখিয়াছিলেন, এখনও তাহার পরিবর্তন হয় নাই, বরং নানাদিক দিয়া পূর্বাপেক্ষা উহা আরও বাড়িয়াছে।

 এক সময়ে আমাদের দেশের এক শ্রেণীর লোকের ধারণা ছিল যে, রবীন্দ্রনাথ ধনীর সন্তান, কল্পনা-বিলাসী কবি, বাস্তব জগতের সঙ্গে, সাধারণ লোকের সুখদুঃখের সঙ্গে তাঁহার কোন পরিচয় নাই, দেশের জাতীয় আন্দোলন বা স্বাধীনতা-আন্দোলনের সঙ্গে তাঁহার প্রাণের যোগ নাই। এই ধারণা যে কিরূপ ভ্রান্ত, উত্তরকালে নিজের কার্যের দ্বারা রবীন্দ্রনাথ তাহা প্রমাণ করিয়াছিলেন। তাঁহার জীবনের যে সময়ের কথা আমরা এখন বলিতেছি, সেই সময়ে তিনি দেশের বাস্তব সমস্যার সঙ্গে পরিচয় লাভের জন্য কঠোর সাধনা করিতেছিলেন। জাতীয় আন্দোলনের সঙ্গে কেবল বুদ্ধির যোগ নয়, হৃদয়ের যোগও স্থাপন করিতেছিলেন। কিন্তু তাঁহার দৃষ্টিভঙ্গী ছিল বিভিন্ন, আবেদন-নিবেদনের পথ তিনি ঘৃণা করিতেন, বঙ্কিমের যোগ্য শিষ্যরূপে আত্মশক্তির সাধনাতেই তিনি দেশের মুক্তির সন্ধান লাভ করিয়াছিলেন। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করিয়া রবীন্দ্রনাথ স্পষ্ট ভাষায় লিখিয়াছিলেন,—

 “রাজদ্বারে নিবেদনের থালা লইয়া বৎসরের পর বৎসর কেবল মাত্র কাঁদুনীর সুরে ‘কিছু দাও কিছু দাও’ করিয়া