পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যৌবনের সাধনা
২৯

কলিকাতা টাউন হলে যে বিরাট সভা হয়, রবীন্দ্রনাথ সেই সভায় “কণ্ঠরোধ” নামক তাঁহার বিখ্যাত প্রবন্ধ পাঠ করেন। উহার এক স্থানে তিনি বলেন,—

 “একদিকে পুরাতন আইন-শৃঙ্খলের মরিচা সাফ হইল, আবার অন্যদিকে রাজকারখানায় নূতন লৌহশৃঙ্খল নির্মাণের ভীষণ হাতুড়ী-ধ্বনিতে সমস্ত ভারতবর্ষ কম্পান্বিত হইয়া উঠিয়াছে! একটা ভয়ানক ধূম পড়িয়া গিয়াছে! আমরা এতই ভয়ঙ্কর!

 “মূল কথাটা এই, তাঁহারা আমাদিগকে জানেন না। আমরা পূর্বদেশী, তাঁহারা পশ্চিমদেশী, আমাদের মধ্যে যে কী হইতে কী হয়, কোথায় আঘাত লাগিলে কোন্‌খানে ধোঁয়াইয়া উঠে, তাহা তাঁহারা ঠিক করিয়া বুঝিতে পারেন না। সেইজন্যই তাঁহাদের ভয়। আমাদের মধ্যে ভয়ঙ্করত্বের আর কোন লক্ষণ নাই, কেবল একটি আছে—আমরা অজ্ঞাত।

 “সত্যই যদি তাহাই হইবে, তবে হে রাজন, আমাদিগকে আর কেন অজ্ঞেয় করিয়া তুলিতেছ? যদি রজ্জুতে সর্পভ্রম ঘটিয়া থাকে, তবে তাড়াতাড়ি ঘরের প্রদীপ নিবাইয়া দিয়া ভয়কে আরও পরিব্যাপ্ত করিয়া তুলিতেছ কেন? যে একমাত্র উপায়ে আমরা আত্মরক্ষা করিতে পারি, তাহা রোধ করিয়া ফল কি?

 “......সংবাদপত্র যতই অধিক এবং যতই অবাধ হইবে, স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে দেশ ততই আত্মগোপন করিতে