বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ

দিয়া তিনি স্বদেশসেবার দীক্ষা দিয়াছিলেন। প্রথমত কর্মযোগ; তিনি স্পষ্টই বলিয়াছিলেন, রজোগুণ ও কর্মযোগ না হইলে এই জীবন্মৃত জাতি বাঁচিবে না। দ্বিতীয়ত, ত্যাগ ও সেবার সাধনা। তিনি নিজের জীবনে আচরণ করিয়া দেখাইয়াছিলেন নারায়ণজ্ঞানে দেশের জনসাধারণকে—দীন, দরিদ্র, মূর্খকে সেবা করিতে হইবে। তৃতীয়ত, “ছুঁৎমার্গে”র পরিহার। যাহাদিগকে আমরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরিয়া অস্পৃশ্য ও অপাংক্তেয়—অনুন্নত ও অবনত করিয়া রাখিয়াছি, তাহাদের মধ্যে মনুষ্যত্বের সঞ্চার করিতে হইবে, নহিলে জাতির মুক্তি নাই। স্বামীজীর এই বিরাট আহ্বানে ঘুমন্ত জাতি সাড়া দিয়াছিল, কঙ্কালে প্রাণের লক্ষণ দেখা দিয়াছিল, একথা আমরা আজ জোর করিয়াই বলিব। উনবিংশ শতাব্দীর শেষ দশকে এবং বিংশ শতাব্দীর আরম্ভে স্বামীজীই জাতিকে নবজীবনের পথ প্রদর্শন করিয়াছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র যে আনন্দমঠের স্বপ্ন দেখিয়াছিলেন, স্বামী বিবেকানন্দ তাহাকে সর্বক্ষেত্রে মূর্ত করিয়া তুলিবার জন্য সাধনা করিয়াছিলেন। তাঁহার সে সাধনা ব্যর্থ হয় নাই, যে হোমানল তিনি প্রজ্বলিত করিয়াছিলেন, তাহারই সঞ্জীবনী-শক্তি উত্তরকালে স্বদেশী আন্দোলনে অশেষ প্রেরণা দিয়াছিল। এক কথায় স্বামী বিবেকানন্দও স্বদেশী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান অগ্রদূত। স্বদেশী যুগের ঊষার আবাহন যাঁহারা করিয়াছিলেন, তন্মধ্যে তাঁহার নাম সর্বাগ্রগণ্য।

 ১৯০১ সালে শ্রীশচন্দ্র মজুমদার ও শৈলেশচন্দ্র মজুমদার