ভ্রাতৃদ্বয়ের উদ্যোগে ‘বঙ্গদর্শন’ পুনঃপ্রকাশিত হয়। এই নব পর্যায়ের ‘বঙ্গদর্শনে’র সম্পাদকের ভার গ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ। বঙ্কিমচন্দ্রের সম্পাদকত্বে একদিন ‘বঙ্গদর্শন’ যেমন নবযুগ আনয়ন করিয়াছিল, রবীন্দ্রনাথের সম্পাদনায় নব পর্যায়ের ‘বঙ্গদর্শন’ও তেমনি স্বদেশী যুগের আবাহনে অশেষ কার্য করিয়াছিল। এই পত্রে রবীন্দ্রনাথ পূর্ণোদ্যমে তাঁহার ‘আত্মশক্তি’র মূলমন্ত্র প্রচার করিতে লাগিলেন, জাতির অন্তর্নিহিত শক্তি যে পল্লী হইতে গড়িয়া তুলিতে হইবে, ইহাও তিনি পাশ্চাত্য রাজনীতির মোহগ্রস্ত শিক্ষিত দেশবাসীকে শুনাইতে লাগিলেন। ভারতের অতীত গৌরব, তাহার সভ্যতা ও সংস্কৃতির কথা এই ‘বঙ্গদর্শনে’র মধ্য দিয়াই প্রবন্ধের পর প্রবন্ধে তিনি ব্যক্ত করিতে লাগিলেন। তখনকার দিনে যুবক ছাত্র সম্প্রদায়ের রবীন্দ্রনাথের প্রতি প্রবল আকর্ষণ ছিল। তাহারা সর্বপ্রকারে তাঁহার অনুকরণ করিতে চেষ্টা করিত, তাঁহার কথায় উঠিত বসিত বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। আর সেই সময়ে বাঙলার ভাব-ও-চিন্তা-জগতের নেতৃত্ব প্রধানত রবীন্দ্রনাথই গ্রহণ করিয়াছিলেন। তিনি প্রায়ই সভায় প্রবন্ধ পাঠ বা বক্তৃতা করিতেন। সেই সমস্ত সভায় এত ভীড় হইত যে, বহু লোককে হতাশ হইয়া ফিরিতে হইত। এইজন্য রবীন্দ্রনাথকে এক একটি প্রবন্ধ পাঠ বা বক্তৃতা ২।৩ বার সভা করিয়া করিতে হইত। তখন বঙ্গভঙ্গ হয় নাই, স্বদেশী আন্দোলনও আরম্ভ হয় নাই। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ তাঁহার বক্তৃতা
পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৪৯
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বদেশী যুগের ঊষা
৩৫