ছিল—উপাধ্যায় ব্রহ্মবান্ধবও ছিলেন তাহারই সাধক। তিনিও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন বা ভিক্ষার রাজনীতিকে ঘৃণা করিতেন। জাতীয় শিক্ষার পরিকল্পনায় ব্রহ্মবান্ধবের দান অশেষ, রবীন্দ্রনাথ তাঁহার নিকট হইতে এ বিষয়ে অনেক সাহায্য পাইয়াছিলেন। শান্তিনিকেতন ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথ যাঁহাদের সহায়তা পাইয়াছিলেন, ব্রহ্মবান্ধবের নাম তাঁহাদের মধ্যে সর্বাগ্রগণ্য। স্বদেশী যুগের উষার আবাহনে এই সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী যে কত বড় কাজ করিয়াছিলেন, তাহার পরিমাপ করা কঠিন।
পরবর্তী কালে স্বদেশী তথা নবজাতীয়তা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা স্বনামধন্য বিপিনচন্দ্র পালও বাঙলার চিন্তা-ও-ভাব-জগতে এই সময়েই নেতৃত্ব করিতে আরম্ভ করেন। রবীন্দ্রনাথ-উপাধ্যায়ের মত তিনিও প্রবন্ধ লিখিয়া ও বক্তৃতা করিয়া যুবকগণের চিত্তে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করিতেছিলেন। কি ইংরেজীতে কি বাঙলায় তাঁহার মত বাগ্মী আমি আর দেখি নাই। শ্রোতৃবর্গের মন লইয়া তিনি যেন ইচ্ছামত খেলা করিতেন, ভাষার ঐশ্বর্যে ও ভাবের সম্পদে তাঁহার বক্তৃতার এমন একটা সম্মোহিনী শক্তি থাকিত যে, সকলে তাহাতে অভিভূত হইয়া পড়িত। বিপিনচন্দ্র ‘নিউ ইণ্ডিয়া’ নামে একখানি ইংরেজী সাপ্তাহিক পত্র প্রকাশ করেন। যুবকদলের মনের উপর এই পত্রিকাখানি যে কি অসীম প্রভাব বিস্তার করিয়াছিল, তাহা ভাষায়