পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ

লক্ষ্য ছিল। যতদূর মনে পড়ে, রবীন্দ্রনাথও এই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে দুই একটি বক্তৃতা করিয়াছিলেন। রামেন্দ্রসুন্দরের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ বন্ধুতা ছিল। তাঁহাদের মধ্যে কেবল সাহিত্য সম্বন্ধেই আলোচনা হইত না—জাতিগঠনের ব্যাপার লইয়াও তাঁহারা আলোচনা করিতেন। স্বদেশী আন্দোলনের সময় ‘রাখীবন্ধন’ উৎসবের অন্যতম পরামর্শদাতা ছিলেন রামেন্দ্রসুন্দর। ‘বঙ্গলক্ষ্মীর ব্রতকথা’ তিনিই রচনা করিয়াছিলেন। এই সন্ধিক্ষণে আর্যা নিবেদিতার প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলীও যুবকগণের চিত্তে জাতীয় আত্মমর্যাদার উদ্বোধন করিয়াছিল। আর্যা নিবেদিতাও রবীন্দ্রনাথের বন্ধু ছিলেন। “ডন সোসাইটি”র সঙ্গেও তাঁহার যোগ ছিল এবং মাঝে মাঝে সোসাইটির সভায় যে তিনি বক্তৃতা করিতেন একথা পূর্বেই বলিয়াছি।

 ১৯০৪ সালে রবীন্দ্রনাথ “স্বদেশী সমাজ” নামে তাঁহার বিখ্যাত বক্তৃতা করেন। এই বক্তৃতায় তখনকার শিক্ষিত সমাজ ও রাজনৈতিক মহলে বিশেষ চাঞ্চল্য ও উদ্দীপনার সঞ্চার হইয়াছিল। এই বক্তৃতা পুস্তিকাকারে প্রকাশিত এবং উহার হাজার হাজার কপি প্রচারিত হইয়াছিল। এই “স্বদেশী সমাজে”ই রবীন্দ্রনাথ তাঁহার জাতিগঠনের নিজস্ব পরিকল্পনা সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন। দেশ ও জাতিকে সংঘবদ্ধ করিয়া একটি স্বয়ংসম্পুর্ণ শাসনতন্ত্র ভিতর হইতে গড়িয়া তুলিতে হইবে, ইহাই ছিল তাঁহার পরিকল্পনার মূল ভিত্তি। বাহিরে বিদেশী