গভর্মেণ্ট থাকুক, তাহার সঙ্গে সংঘর্ষ সৃষ্টির প্রয়োজন নাই, দেশবাসীর নিজের সামাজিক ও অর্থ নৈতিক প্রয়োজন তাহারা স্বতন্ত্রভাবে নিজেরাই মিটাইবার চেষ্টা করিবে। নিজেদের শিল্পবাণিজ্য নিজেরাই গড়িয়া তুলিবে। সালিশী প্রথার দ্বারা বিবাদ-বিসম্বাদ মিটাইবার ব্যবস্থা করিতে হইবে। শান্তি রক্ষার জন্য স্বেচ্ছাসেবক দল গঠনের ব্যবস্থাও ইহার মধ্যে ছিল, স্বদেশী বিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাবও করা হইয়াছিল। অর্থাৎ বৃহত্তর বিদেশী গভর্মেণ্টের অভ্যন্তরে আর একটি স্বতন্ত্র স্বসম্পুর্ণ “স্বদেশী সমাজ” গড়িয়া তুলিতে হইবে, ইহাই ছিল মূল কল্পনা। আয়র্লাণ্ডের জাতীয়তাবাদীরা ইংরেজ গভর্মেণ্টের পাশাপাশি যেমন একটি স্বতন্ত্র শাসনব্যবস্থা গড়িয়া তুলিতে চেষ্টা করিয়াছিল, রবীন্দ্রনাথের পরিকল্পনাও অনেকটা সেইরূপই ছিল। এই “স্বদেশী সমাজ” স্থায়ীভাবে গঠন করিবার উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রনাথ বহুদূর অগ্রসর হইয়াছিলেন। ইহার সদস্যদের জন্য প্রতিজ্ঞাপত্রের খসড়া পর্যন্ত তিনি রচনা করিয়া প্রচার করিয়াছিলেন। প্রতিজ্ঞাপত্রের ভূমিকা ছিল এইরূপ:—
“আমরা স্থির করিয়াছি, আমরা কয়েকজন মিলিয়া একটি সমাজ স্থাপন করিব। আমাদের নিজেদের সম্মিলিত চেষ্টায় যথাসাধ্য আমাদের অভাব মোচন ও কর্তব্য সাধন আমরা নিজেরা করিব। আমাদের শাসনভার নিজে গ্রহণ করিব, যে সকল কর্ম আমাদের স্বদেশীয়দের সাধ্য, তাহার জন্য অন্যের সাহায্য লইব না। এই অভিপ্রায়ে আমাদের সমাজের বিধি