জনসাধারণের মধ্যে সহজ ভাষায় তাহা প্রচার করা ‘ভাণ্ডারে’র অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। সুরেন্দ্রনাথ, বিপিনচন্দ্র, ব্রহ্মবান্ধব, রামেন্দ্রসুন্দর, হীরেন্দ্রনাথ দত্ত প্রভৃতি ‘ভাণ্ডার’-এর আলোচনায় যোগদান করিতেন। কেবল স্বদেশী শিল্পের সম্বন্ধে আলোচনা করিয়াই ‘ভাণ্ডারে’র কর্তব্য শেষ হয় নাই। শ্রীযুত কেদারনাথ দাশগুপ্তের উদ্যোগে “লক্ষ্মীর ভাণ্ডার” নামক স্বদেশী শিল্পজাতের একটি বিপণীও খোলা হয়। শ্রীযুক্তা সরলা দেবী উহার তত্ত্বাবধানের ভার গ্রহণ করেন। এই প্রসঙ্গে শ্রীযুক্তা সরলা দেবী যে ‘বীরাষ্টমী’ উৎসবের প্রবর্তন করেন, তাহাও উল্লেখযোগ্য। এই উৎসব যে তখনকার দিনে যুবকদের চিত্তে জাতীয়ভাবের উদ্বোধনে সহায়তা করিয়াছিল, তাহাতে সন্দেহ নাই। শ্রীযুক্তা সরলা দেবীর সম্পাদিত ‘ভারতী’ পত্রিকাও জাতীয়ভাব প্রচারে যথেষ্ট সহায়তা করিয়াছিল। রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং একবৎসর ‘ভারতী’র সম্পাদক ছিলেন এবং তাঁহার কয়েকটি বিখ্যাত রাজনৈতিক প্রবন্ধ উহাতে প্রকাশিত হইয়াছিল।
১৯০০-১৯০৫—এই পাঁচ বৎসর বাঙলার জাতীয় জীবনে মহাসন্ধিক্ষণ। এই পাঁচ বৎসরে বাঙলা দেশ এক শতাব্দীর পথ অতিক্রম করিয়াছিল। রবীন্দ্রনাথ, এই ‘স্বদেশী যুগের ঊষায়’ জাতির ভাব ও চিন্তা পরিচালনার কার্যে প্রধান অংশ গ্রহণ করিয়া তাহাকে বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করিয়াছিলেন।