ঘটনাকে উপলক্ষ্য করিয়া স্বদেশী আন্দোলন আরম্ভ হইত। মানুষের জীবনেও দেখা যায়, কোন একটা আকস্মিক ঘটনাকে উপলক্ষ্য করিয়াই দীর্ঘকালের প্রতীক্ষিত বিরাট পরিবর্তনের সূচনা হয়। বাঙালী জাতি যখন দেখিল, তাহাদের জাতীয় সংহতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সভ্যতা, ভাষা, সাহিত্য সমস্তই বিপর্যস্ত হইতে চলিয়াছে, তখন তাহাদের অবরুদ্ধ শক্তি প্রচণ্ড বিক্ষোভে প্রকাশিত হইয়া পড়িল। ইতিহাসে এরূপ ঘটনা বিরল নহে। গত মহাযুদ্ধের সময় সার্ভিয়ার একজন লোক অস্ট্রিয়ার প্রিন্সকে হত্যা করিয়াছিল; এই ঘটনাকে উপলক্ষ্য করিয়াই বিশ্বব্যাপী সমরানল প্রজ্বলিত হইয়াছিল। অস্ট্রিয়ার প্রিন্সকে হত্যা না করিলে সেই সমরানল প্রজ্বলিত হইত না, এমন কথা কে বলিবে?
আমরা পূর্বেই বলিয়াছি ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাঙলা দেশে জাতীয় আন্দোলনের দুইটি ধারা স্বতন্ত্রভাবে প্রবাহিত হইয়া আসিতেছিল। একটি ছিল নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারা। রাজা রামমোহন রায়ের সময় হইতে কংগ্রেসের জন্ম পর্যন্ত এই ধারা সুস্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যায়। কংগ্রেস ইহারই উত্তরাধিকারী হইয়াছিল। বাঙলা দেশের নেতারাই কংগ্রেসের জন্ম হইতে উহাতে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করিয়াছিলেন। কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি বাঙালী ব্যারিস্টার উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দমোহন বসু, ভূপেন্দ্রনাথ বসু, বৈকুণ্ঠনাথ সেন, অম্বিকাচরণ মজুমদার,