বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বদেশী আন্দোলন
৫১

যাত্রামোহন সেন, আনন্দচন্দ্র রায়, কৃষ্ণকুমার মিত্র, কালীপ্রসন্ন কাব্যবিশারদ প্রভৃতি কংগ্রেসের স্তম্ভস্বরূপ ছিলেন। যখন বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে স্বদেশী আন্দোলন আরম্ভ হইল তখন বাঙলার এই সব কংগ্রেস নেতারাই সর্বাগ্রে উহার পুরোভাগে আসিয়া দাঁড়াইলেন। বাঙলার সর্বত্র সভাসমিতি বক্তৃতা করিয়া জাতিকে সজাগ করিয়া তুলিলেন। বঙ্গভঙ্গ বাতিল করিবার জন্য তাঁহারা ব্রিটিশ গভর্মেণ্টের নিকট তীব্র প্রতিবাদপত্র প্রেরণ করিতে লাগিলেন।

 কিন্তু ইতিমধ্যে দেশে আর একদল নেতার আবির্ভাব হইয়াছিল। ইহারা নিয়মতান্ত্রিকতা বা ভিক্ষা-নীতির বিরোধী —আত্মশক্তির সাধক এবং বঙ্কিম-বিবেকানন্দ প্রভৃতি বাঙলার সাহিত্যিক ও মনীষীদের ভাবধারার উত্তরাধিকারী। রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং এই ধারার একজন অগ্রগামী পথিক। ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়, বিপিনচন্দ্র পাল প্রভৃতিও ছিলেন তাঁহারই সহযাত্রী। যখন স্বদেশী আন্দোলন আরম্ভ হইল, তখন এই আত্মশক্তির সাধকেরাও সেই আন্দোলনের মধ্যে আসিয়া দাঁড়াইলেন। এই নবীন দল বলিলেন, ও সব আবেদনে কিছু কাজ হইবে না, আমাদের জাতীয় শক্তির সাধনা করিতে হইবে ও তাহার পরিচয় দিতে হইবে, তবেই ইংরেজ কেবল বঙ্গভঙ্গ বাতিল করিতে বাধ্য হইবে। রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে অর্থনৈতিক সংগ্রাম চালনাও এই নূতন দলের নেতাদেরই পরিকল্পনা। একদিকে আমাদের স্বদেশী শিল্পের পুনরুদ্ধার ও প্রচার,