যে, বহু লোক টাউন হলে প্রবেশ করিতে পারে নাই। সেই কারণে এক সপ্তাহ পরে আর এক স্থানে সভা করিয়া পুনরায় ঐ প্রবন্ধ পঠিত হয়। ইহার পর প্রায় প্রতিদিনই নানা স্থানে জনসভা হইতে লাগিল এবং রবীন্দ্রনাথ বহু সভাতেই যোগদান করিয়া প্রবন্ধ পাঠ বা বক্তৃতা করিতে লাগিলেন। নিত্য নূতন জাতীয় সংগীতও রবীন্দ্রনাথ এই সময়ে রচনা করিতে লাগিলেন ও প্রত্যেক সভাতেই ঐ সমস্ত সংগীত গীত হইতে লাগিল। সমগ্র দেশ এইভাবে স্বদেশী আন্দোলনে মাতোয়ারা হইয়া উঠিল।
১৯০৫ সালের ১৬ই অক্টোবর হইতে বঙ্গভঙ্গ কার্যকরী হইবে বলিয়া গভর্মেণ্ট ঘোষণা করেন। ঐ দিনই চিরস্মরণীয় রাখীবন্ধনের উৎসব ধার্য হয়। পূর্বেই বলিয়াছি, রবীন্দ্রনাথই মনীষী রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর সহযোগিতায় এই উৎসবের পরিকল্পনা করেন। সমগ্র বাঙালী জাতি অতি সহজেই এই উৎসব গ্রহণ করিয়াছিল এবং বঙ্গভঙ্গ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এবং তাহারও পর কয়েক বৎসর পর্যন্ত ১৬ই অক্টোবর (৩০শে আশ্বিন) তারিখে এই উৎসব পূর্ণোদ্যমে অনুষ্ঠিত হইয়াছিল। বিশেষ করিয়া এই উৎসবের জন্যই রবীন্দ্রনাথ নিম্নলিখিত গানটি রচনা করিয়া গিয়াছেন—
বাঙলার মাটি বাঙলার জল
বাঙলার বায়ু বাঙলার ফল
পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক হে ভগবান্।