বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ

এই সময়েই হইয়াছিল; কৈশোর হইতে তিনি যে দেশপ্রেম ও সেবার সাধনা করিয়াছিলেন, তাহার ফল এই সময়েই জাতিকে তিনি পূর্ণরূপে দান করিবার সুযোগ পাইয়াছিলেন। ইহা কেবল আমাদেরই অভিমত নহে, রবীন্দ্রনাথ নিজেও এইরূপ মনে করিতেন। শ্রীমতী রাণী চন্দকে তিনি বলিয়াছিলেন, “তখন, ভাবতে আশ্চর্য লাগে, কি নিঃশঙ্ক বেপরোয়াভাবে কাজ করেছি! যা মাথায় ঢুকেছে করে গেছি—কোনো ভয়-ডর ছিল না। আশ্চর্য রূপ দিয়েছে, ছবির পর ছবি ফুটিয়ে গেছে অবন। সে একটা যুগ, আর তাদের রবিকাকা তার মধ্যে ভাসমান। আজ অবনের গল্পে সে কালটা যেন সজীব প্রাণবস্ত হয়ে ফুটে উঠল। আবার সে যুগে ফিরে গিয়ে নিজেকে দেখতে পাচ্ছি। ঐখানেই পরিপূর্ণ আমি। পরিপূর্ণ আমাকে লোকে চেনে না—তারা আমাকে নানাদিক থেকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দেখেছে। তখন বেঁচে ছিলুম,—আর এখন আধমরা হয়ে ঘাটে এসে পৌঁচেছি।”[]

 স্বদেশী আন্দোলনের প্রারম্ভ হইতেই রবীন্দ্রনাথ তাহার তরঙ্গের মধ্যে ঝাঁপাইয়া পড়িলেন। ১৯০৫ সালের ২৫শে আগস্ট বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কলিকাতা টাউন হলে যে বিরাট সভা হয়, রবীন্দ্রনাথ তাহাতে তাঁহার বিখ্যাত প্রবন্ধ “অবস্থা ও ব্যবস্থা” পাঠ করেন। ভীড় এত বেশী হইয়াছিল


  1. শ্রীঅবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখিত ‘ঘরোয়া’ গ্রন্থের ভূমিকা।