আর করি—হেঁটে যেতেই যখন হবে, চাকরকে বল্লুম যে, সব কাপড় জামা নিয়ে চল্ সঙ্গে। তারাও নিজের নিজের গামছা নিয়ে চল্ল স্নানে—মনিব-চাকরে এক সঙ্গে স্নান হবে। রওনা হলুম সবাই গঙ্গাস্নানের উদ্দেশ্যে, রাস্তার দুধারে বাড়ির ছাদ থেকে আরম্ভ ক’রে ফুটপাত অবধি লোক দাঁড়িয়ে গেছে— মেয়েরা খৈ ছড়াচ্ছে, শাঁক বাজাচ্ছে, মহা ধূমধাম—যেন একটা শোভাযাত্রা। দিনুও ছিল সঙ্গে—গান গাইতে গাইতে রাস্তা দিয়ে মিছিল চল্ল—
বাঙলার মাটি
বাঙলার জল
পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক হে ভগবান্।
এই গানটি সে সময়েই তৈরী হয়েছিল। ঘাটে সকাল থেকে লোকারণ্য। রবিকাকাকে দেখবার জন্য আমাদের চারিদিকে ভিড় জমে গেল। স্নান সারা হলো—সঙ্গে নেওয়া হয়েছিল একগাদা রাখী, এ ওর হাতে রাখী পরালুম। অন্যরা যারা কাছাকাছি ছিল, তাদেরও হাতে রাখী পরানো হলো। হাতের কাছে ছেলেমেয়ে যাকে পাওয়া যাচ্ছে, কেউ বাদ পড়ছে না, সবাইকে রাখী পরানো হচ্ছে। গঙ্গার ঘাটে সে এক ব্যাপার। পাথুরেঘাটা দিয়ে আস্ছি, দেখি বীরু মল্লিকের আস্তাবলে কতকগুলো সহিস ঘোড়া মল্ছে। হঠাৎ রবিকাকারা ধাঁ করে বেঁকে গিয়ে ওদের হাতে রাখী পরিয়ে দিলেন। ভাবলুম রবিকাকারা করলেন কী, ওরা যে মুসলমান,