এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ
দেশমাতৃকা যে গাছপালা, মাটি, জল, আকাশ, গ্রাম-নগর লোকসংখ্যার সমষ্টিমাত্র নহেন, ইহার অন্তরালে তাঁহার যে চিন্ময়ী রূপ আছে, আমাদের সভ্যতা সংস্কৃতি, হাজার হাজার বৎসরের সুখদুঃখ বেদনা, ইতিহাসের ভাঙাগড়া উত্থানপতন—সমস্ত মিলিয়া সহস্রদল পদ্মে সেই চিন্ময়ী জননীর পাদপীঠ রচনা করিয়াছে, এই সত্য বঙ্কিমচন্দ্রই প্রথমে পূর্ণরূপে উপলব্ধি করিয়াছিলেন। “বন্দে মাতরম্” সংগীত সেই চিন্ময়ী দেশ-জননীর ধ্যান। বঙ্কিম-শিষ্য রবীন্দ্রনাথও মাতৃভূমির এই চিন্ময়ী রূপকেই অন্তরে প্রত্যক্ষ করিয়াছিলেন।—
অয়ি ভুবন-মনোমোহিনী,
অয়ি নির্মল-সূর্যকরোজ্জ্বল ধরণী,
জনক-জননী-জননী ॥
নীল-সিন্ধু-জল- ধৌত-চরণতল,
অনিল-বিকম্পিত-শ্যামল-অঞ্চল,
অম্বর-চুম্বিত-ভাল-হিমাচল,
শুভ্র-ভূষার-কিরীটিনী॥
* * * *
চিরকল্যাণময়ী তুমি ধন্য,
দেশবিদেশে বিতরিছ অন্ন,
জাহ্নবী-যমুনা-বিগলিত-করুণা,
পুণ্যপীযূষ-স্তন্যবাহিনী॥