পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বদেশী আন্দোলন (শেষার্ধ)
৭৫

সংগীতের মতো জাতির চিত্তের উপর এত বেশী প্রভাব বিস্তার করে নাই।

 স্বদেশী আন্দোলনের সময় উহারই সঙ্গে সঙ্গে যে ‘জাতীয় শিক্ষা আন্দোলন’ হইয়াছিল, রবীন্দ্রনাথ তাহাতেও প্রধান অংশ গ্রহণ করিয়াছিলেন।

 সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবর্তিত বিজাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে প্রবল বিদ্রোহরূপেই এই ‘জাতীয় শিক্ষা আন্দোলন’ দেখা দিয়াছিল। যে শিক্ষাপ্রণালীর সঙ্গে আমাদের মাতৃভূমির যোগ নাই, আমাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতি হইতে যাহা বিচ্ছিন্ন, সর্বোপরি যাহা সম্পুর্ণরূপে সরকারী নীতির করায়ত্ত, সে শিক্ষা কখনই জাতির মনুষ্যত্বকে উদ্বোধন করিতে পারে না। অতএব সম্পূর্ণরূপে আমাদের নিজেদের আয়ত্তাধীনে, আমাদের জাতীয় আদর্শ ও সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করিয়া শিক্ষানীতি প্রবর্তিত করিতে হইবে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করিতে হইবে। ইহাই ছিল সংক্ষেপে ‘জাতীয় শিক্ষা আন্দোলন’-এর মূল কথা। আচার্য রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী, মনস্বী হীরেন্দ্রনাথ দত্ত, মোহিনীমোহন চট্টোপাধ্যায়, আশুতোষ চৌধুরী, গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, শ্রীঅরবিন্দ ঘোষ এই আন্দোলনের মূলে ছিলেন। রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক এবং মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী, ব্রজেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী এবং তারকনাথ পালিত এই আন্দোলনের জন্য প্রভূত অর্থ দান করেন এবং তাঁহাদেরই