পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—‘চাকরি পেয়ে গেল বুঝি সেখানে ? —‘হ্যা, খুব ভালো চাকরি, ফুসফুসে যক্ষ্মা। —যক্ষ্মা ? —“কিন্তু ভাওয়ালিতে গিয়ে শুনল প্রভাতের হয়েছে ভালো। সানিটেরিয়ামের জন্য বেডের ব্যবস্থা করা হয় নি। পাওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই। মধুপুর চলে গেল।’ একটু চুপ থেকে বললাম—আমি দেখে এসেছি কলকাতায় এসেছে।’ —"কেন ?” —’ল পড়ছে। হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করবে।’ দুজনেই কিছুক্ষণ চুপ করে রইলাম। ‘খুব...তেঁতুল গাছের ডালপালার মধ্যে বক নেই, সফলতা-নিস্ফলতার প্রশ্ন নিয়ে জীবনবিধাতা খোচা দিতে আসেন না।’ —‘কলকাতার চিড়িয়াখানায় যাস ? —না।’ —"কেন ?” —খিদিরপুরে ট্রামে যাওয়া-আসায় আমার কতকগুলো পয়সা খরচ হয়ে যায়।’ —খিদিরপুর না আলিপুর ? —খিদিরপুর ব্রিজের কাছে নামলেই হয়।’ —‘চিড়িয়াখানায় যেতে হলে ?’ —‘হ্যা, খিদিরপুর বাজারটার কাছেই তো।” —তা ট্রামে কত পয়সাই-বা লাগে, একআধ দিনের জন্যই তো যাওয়া!” —‘কলকাতায় একটা পয়সারও দাম আমার কাছে খুব বেশি; হিশেব করে খরচ করতে হয়। এ-রকম করে-করে হৃদয় গেছে মুষড়ে, জীবন বডড নোংরা হয়ে গেছে। কিন্তু কী করব ? উপায় নেই তো। চুরি তো করতে পারি না। জুতো বুরুশ করতে লজ্জা করে। —‘মিউজিয়ামের সেই চিতা বাঘটা এখনো আছে ?” ১৭৯