পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘আমি অণর একদিন আসব রিপেন।” নিজের মনেই খুশিতেই কেমন একটা সৌজন্য এসে পড়ল। নিশীথের মুখে, বললে, ‘আজ শুধু দোতলা হয়ে ও’র সঙ্গে একটু দেখা করে চলে যাব ।’ এত করে বলছি, তবুও মানছেন না আপনি, বডড নাছোড়বান্দন আপনি নিশীথবাবু, সত্যিই উনি বিরক্ত হবেন আপনি গেলে । দু-কলম লিখতেই গণদণগদা রেফারেন্স ডিকশনারি দেখতে হয় ওরি । এখন লোকজন গেলে খেই হারিয়ে ফেলবেন ।” নিশীথ উপরে যাবার পথে পা বাড়িয়ে দিয়ে বললে, “আমি এক জন কলেজ টিচার, অগর একজন কলেজ টিচারের সঙ্গে দেখা করতে পারব না ?’ রিপেন মরণীয়া হয়ে বললে, কিন্তু দেখা করবার জন্যে ঠিক সময় বেছে না এলে চলবে কেন ? এখন উনি—’ 'বেলগাছিয়গর থেকে পাকা দেখার সময় বেছে কেউ কখনো বালিগঞ্জে আসতে পারে : ৩মি বেশি কিছু করব না শুধু একটু বুড়ি ছুঁয়ে চলে যাব।’ ‘যাবেন না, যাবেন না । কী দরকার অণপনার ঘোষ সাহেবের সঙ্গে বলে যান । আসুন স্লিপ লিখে দিন । নিশীথ রিপেনের দিকে ঘাড় ফিরিয়ে হেসে বললে, “আমি একজন কলেজের টিচণর, আগর-একজন কলেজের টিচারের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি । তিনি বাড়িতেই আগছেন, ঘুমের থেকে উঠেছেন, দাড়ি কমিয়ে চ খেয়ে চান সেরে পড়ছেন, কিংবা লিখছেন একটা খসড়া সেন্টাল গভর্নমেন্টের জন্যে । আমার কাজ পাচ মিনিটের কিংবা মিনিট পনের-কুড়ি, বড় জোর । আমিও ঐ সেন্টাল গভর্নমেণ্টের খসড়া সম্পর্কেই এসেছি ।” রিপেন কেমন নিরেট কটমট মুখে দাড়িয়ে ছিল । নিশীথের মুখে শেষ কথাটা শুনে খানিকটা ধোয়া কেটে গেল যেন তার মুখ থেকে। কিন্তু তবুও সম্পূর্ণ স্বণচছন্দ্য বোধ করতে পারছিল না সে । ‘ঘোষ সাহেব তো দেশের এখনকার শিক্ষণব্যবস্থা বদলে সব দিক দিয়ে কী সব সুব্যবস্থার প্রবর্তন করতে পারা যায় সেই সম্পর্কে সুপারিশ পেশ করবেন। জিনিসটার পক্ষে আমি খুব ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছি রিপেন। নতুন শিক্ষা সংস্কার সম্পর্কে ঘোষ সাহেবকে কিছু বলতে হবে আমার । কিছুই হবে না হয় তো ; ঘোষ হয় তো বুঝবেন না, কিংবা কেন্দ্র গ্রাহ্য করতে চাইবে না । ՀՑՏ ১৬