পাতা:জীবনী-কোষ - দ্বারকানাথ বসু.pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তুকারাম [ আমাকে এত ভালবাস ষে এই আক্ গাছট একলা খাইতে ভাল লাগিবে না বলিয়া তাহ দুই খণ্ডে ভাঙ্গিয়া ফেলিলে ।” তুকারামের বিংশতি বৎসর বয়সে র্তাহার পিতামাতার মৃত্যু হয় এবং জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা উদাসীন হইয়া গৃহ ত্যাগ করেন। এই সকল কারণে ইনি অতীব দুঃখিত চিত্তে দিনযাপন করিতে লাগিলেন। এই সময় দেশে ভয়ানক দুর্ভিক্ষ হইলে, ইহঁার মন সংসারের উপর একেবারে বিতৃষ্ণ হইল। অতঃপর তুকারাম সৰ্ব্ব কৰ্ম্ম পরিত্যাগ পূৰ্ব্বক ঈশ্বর উপাসনায় জীবন যাপন করিতে মনস্থ করিলেন। এই উদ্দেশে ইনি প্রায়ই গ্রামস্থ নদীতীরে দেবমন্দিরে ভজন পূজনে মনোনিবেশ করিলেন । ধৰ্ম্মের জন্য মন অধীর হইলে, ইনি স্বপ্নে চৈতন্তের শিষ্য জনৈক বাবাজির নিকট মন্ত্র প্রাপ্ত হন— স্বপ্নে মোর গুরুমন্ত্র করিয়া গ্রহণ, ঈশ্বরে অচল ভক্তি করিনু স্থাপন । তদনন্তর তুকারাম ভজন, পূজন, ও কীৰ্ত্তনে সময় অতিবাহিত করিতে লাগিলেন। ইনি শ্লোক রচনা পূর্বক কথকতা ও কীৰ্ত্তন করিতেন এবং এই উপায়ে লোকের মন ধৰ্ম্মপথে লইতে চেষ্টা করিতেন। "ইহার অনেক শিষ্য হইল। ইহঁাদের ১৯ ] তুকারাম অনেকেই পুৰ্ব্বে ইহঁার শত্রু ছিলেন, পরে ইহঁার সাধু ব্যবহারে পরজিত হইয়া ইহার শরণাগত হইয়াছিলেন । শিবজি তুকারামের প্রশংসা সৰ্ব্বজনমুখে শ্রবণ করিয়া ইহাকে আনয়নার্থ দূত প্রেরণ করেন। ইনি রাজপুরে গমনে অনিচ্ছুক হইয়া অতি বিনীতভাবে কবিতায় র্তাহার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিলেন । অতঃপর মহারাষ্ট্রপতি ইহার কুটীরে গমন পূর্বক ইহার সহিত সাক্ষাৎ করিলেন । তিনি বহুল অর্থ উপহার দ্বিলে, ইনি অতি নম্রতার সহিত সে সকল অনাবশ্যক বলিয়া প্রত্যপণ করিলেন । শিবজি ইহঁার নিকট ধৰ্ম্মোপদেশ শ্রবণে সংসারের প্রতি বীতর্তৃষ্ণ হইয়া, রাজকাৰ্য্য ত্যাগ করিয়া বনগমন পূৰ্ব্বক ধৰ্ম্ম চিন্তায় রত হইলেন । তখন র্তাহার মাতা জিজাবাই তুকারামের নিকট উপস্থিত হইয়া সমুদায় জ্ঞাপন করিলেন । সন্ধ্যার পর কীৰ্ত্তনের সময় শিবজি উপস্থিত হইলে, ইনি র্তাহাকে সার উপদেশ দানে পুনরায় সংসারী করিলেন। ১৬৫৯ খৃষ্টাকে তুকারাম মানবলীলা সম্বরণ করেন। তুকারাম মহারাষ্ট্রের জাতীয় কবি। ইহঁার কবিতা মহারাষ্ট্রের সর্বত্রই আদৃত।