পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাধু তুকারাম। Ꭹ ᏩᏬ প্রচুর পরিমাণে শস্য পাইয়া মনের আনন্দে গৃহে আইসেন এবং সেই শম্ভের বিক্রয়লব্ধ আয় হইতে র্তাহার কয়েকটী কন্যার বিবাহ দেন। তুকারামের তিনটী কন্যা এবং দুইটী পুত্র ছিল। কন্যা তিনটীর নাম,- গঙ্গা, ভাগীরথী ও কাশী, এবং পুত্র দুইটীর নাম, শম্বুজী ও বিঠোবা। প্ৰথম কন্যাটী বিবাহযোগ্য দেখিয়া জীজাবাঈ তাহার বিবাহের জন্য তুকারামকে অত্যন্ত ব্যস্ত করিতেন। তুকারাম জ্বালাতন হইয়া এক দিন শুভক্ষণে পাত্ৰ অনুসন্ধানে বহির্গত হন। তিনি নিকটস্থ একটী গ্রামে গিয়া দেখেন যে, কতকগুলি বালক খেলা করিতেছে। তিনি উহাদিগের মধ্যে স্বজাতীয় তিনটী বালককে বাছিয়া আপনার বাটীতে লইয়া আইসেন এবং বিবাহের লগ্নানুসারে ঐ তিনটী বালকের সহিত আপনার তিন কন্যার বিবাহ দেন। গ্রামস্থ ব্যক্তিগণ তুকারামের স্বভাব জানিতেন, সুতরাং তঁাহারা এই বিষয়ের জন্য কোনরূপ গোলমাল করেন নাই। একদিন তুকারাম ক্ষেত্ৰ হইতে একটী আখের বোঝা আনিতেছিলেন, পথিমধ্যে কতকগুলি বালক তুকারামকে আখের বোঝা আনিতে দেখিয়া, কাতরভাবে একগাছি আখ প্রার্থনা করে। তুকারাম কোমলমতি বালকদিগের ঈদৃশ প্রার্থনা অগ্ৰাহা করিতে পারেন নাই। পথিমধ্যে যে কয়েকজন বালক ছিল, তিনি আখের বোঝাটী তাহাদের সকলকেই বিতরণ করিয়া, কেবল একগাছি মাত্র আখ বাটীতে লইয়া আইসেন। জীজাবাঈ ইহা জানিতে পারিয়া, ক্ৰোধে অধীরা হইয়া সেই ইক্ষুদণ্ড তুকারামের পৃষ্ঠে দুইখণ্ড করেন। স্ত্রীর প্রহার সহ করিয়া তুকারাম হাসিতে হাসিতে বলিয়াছিলেন, “সহধৰ্ম্মিণি! ইহাই ত প্রকৃত ধৰ্ম্ম। আমি তোমাকে একগাছি আখ খাইতে দিলাম, তুমি তাহা দ্বিখণ্ড করিয়া একখণ্ড আমায় প্ৰদান করিলে।” তুকারাম স্ত্রীর এইরূপ কত দুৰ্ব্বাক্য-কত প্ৰহাের অমানবন্ধনে সহস্থ করিয়াছিলেন।