পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ο ά 8 জীবনী-সংগ্ৰহ। রুক্মীবাঈ এর মৃত্যুর কিছুকাল পরে তুকারামের জ্যেষ্ঠ পুত্ৰ শস্তৃজীর জীবনান্ত হয়। তুকারাম শাস্তুজীকে অত্যন্ত ভালবাসিতেন। তাহার অকালমৃত্যুতে তুকারাম হৃদয়ে নিদারুণ বেদনা প্রাপ্ত হন। এই সময়ে তুকারামের জ্ঞানের সঞ্চার হয়। তিনি এই বলিয়া ভাবিতে লাগিলেন যে, “সংসারে সুখ নাই। সংসারে থাকিয়া সুখভোগ করিব, এই আশায় আমি কত চেষ্টা করিলাম, কিন্তু সকলই ব্যর্থ হইল। অঙ্গার ঘর্ষণ করিলে যেমন তাহার অভ্যন্তরে কেবল গাঢ়তর কালিমাই লক্ষিত হয়, সংসার-মধ্যেও সেইরূপ যত প্ৰবেশ করা যায়, ততই দুঃখের মাত্ৰা বৰ্দ্ধিত হয়। ধন, রত্ন প্রভৃতি সংসারের সকল বস্তুই আসার, তবে আমি কেন এই সংসারের মধ্যে পড়িয়া থাকি ?” এইরূপ চিন্তা করিয়া তুকারাম সংসার পরিত্যাগ করেন। তুকারাম বাটী পরিত্যাগ করিয়া ভান্বনাথ নামক পৰ্ব্বতে গমন করেন। সেই স্থানে তিনি স্বীয় আরাধ্য দেবতা বিঠোবার চরণে প্ৰাণমন সমর্পণ করিয়া ধ্যান করিতে থাকেন। তুকারাম ঈশ্বর-সেবায় দিনযাপন করিতে লাগিলেন বটে, কিন্তু তখনও তিনি ধৰ্ম্মমত স্থির করিতে পারেন নাই। এক দিবস তুকারাম স্বপ্ন দেখেন যে, তিনি ভীমা নদীতে স্নান করিতে । যাইতেছেন, এরূপ সময়ে একজন ব্ৰাহ্মণ র্তাহার মস্তকে হস্ত প্ৰদান করিয়া আশীৰ্বাদ করিলেন। পরে তিনি তাহার নিকট হইতে এক পোয় ঘূত যাল্কা করেন। ঐ বৃদ্ধ বলিয়াছিলেন, তঁহার নিজ নাম বাবাজী এবং তাহার দীক্ষাগুরুদিগের নাম রাঘবচৈতন্য ও কেশবচৈতন্য। ঐ ব্ৰাহ্মণ তঁহাকে “রামকৃষ্ণহরি।” এই মূলমন্ত্র প্রদান করিয়া কোথায় গমন করিলেন, তাহা তিনি স্থির করিতে পারিলেন না। তুকারাম স্বপ্নে দীক্ষাপ্রাপ্ত হইয়া পাণ্ডুরঙ্গদেবের + আশ্রয়গ্ৰহণ করেন।

  • দাক্ষিণাত্যে শ্ৰীকৃষ্ণের একটী প্ৰসিদ্ধ নাম পাণ্ডুরঙ্গ। পাণ্ডারপুরের পাণ্ডুরঙ্গবিগ্ৰহ বিশেষ প্ৰসিদ্ধ।