পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাধু তুকারাম। S @ ዓ দূরে থাকি, নির্জনতায় সুখ-সম্ভোগ করি, মৌনী হইয়৷ থাকি, এবং ঐশ্বৰ্য্য, মান, সন্ত্রম ইত্যাদিকে বমনোন্দগীর্ণ খাদ্যের ন্যায় জ্ঞান করি ; কিন্তু হে পাণ্ডারিনাথ ! আমার ইচ্ছায় কি হইতে পারে ? সকলই তোমার অধীন। হে রাজনী! তোমার নিকটে গিয়া আমার কি লাভ হইবে ? যদ্যপি আমার খাদ্যের প্রয়োজন হয়, ভিক্ষা-বৃত্তি আমার সমক্ষে প্ৰশস্ত পথ রহিয়াছে। যদি আমার বস্ত্রের প্রয়োজন হয়, পথে পতিত ছিন্ন বস্ত্র আমার অভাব পূর্ণ করিবে। রাজনী! বাসনা জীবনকে নষ্ট করে মাত্র । যাহারা সন্ত্রম লাভ করিতে ইচ্ছা করে, তাহারাই রাজপ্রাসাদে যাইতে যত্নবান হয়। মহারাজ ! আমি নতশির হইয়া তোমাকে এই পত্ৰখানি লিখিলাম।” মহাত্মা শিবাজী তুকারামের পত্র পাঠ করিয়া বলিয়াছিলেন, “ঈশ্বরপ্ৰসাদ ভোগ করিয়া যিনি পরিতৃপ্ত হইয়াছেন, তাহার নিকট রাজপ্ৰসাদ কণ্টকাকীর্ণ বনস্বরূপ।” তুকারাম সাধনায় এরূপ সিদ্ধ হইয়াছিলেন যে, লোহা-গাভা গ্রামে যে সময়ে তিনি কীৰ্ত্তন করিতেছিলেন, সেই সময়ে কোন স্ত্রীলোক নিজ সন্তানের মৃতদেহ লইয়া তুকারামের সমক্ষে লইয়া আইসে ও বলে, “মহাশয়! আপনি যদি যথার্থ বিষ্ণুভক্ত হন, তাহা হইলে নিশ্চয়ই আমার পুত্রের জীবনদান করিতে সমর্থ হইবেন ; নচেৎ সকলই আপনার ভণ্ডামী বুঝিব!” ' রমণী শোকে মুহােমানা হইয়া এই কয়েকটী কথা বলিলে পর তুকারাম অন্তরে বুঝিয়াছিলেন যে, “এই রমণীর বিশ্বাস, ঈশ্বরভক্তিমাত্রেই মৃতব্যক্তির জীবনদান করিতে পারে, কিন্তু সে ক্ষমতা তা আমার জন্মায় নাই,” এইরূপ মনে করিয়া তিনি নারায়ণের স্তব করেন। . প্ৰবাদ এই যে, নারায়ণের স্তব করিবামাত্র মৃত বালকট, সজীব হইয়াছিল।