পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

98 জীবনী-সংগ্ৰহ। রূপলাবণ্যসম্পন্ন একজন দিব্য পুরুষ ধনুৰ্ব্বাণ হস্তে লইয়া তাহাকে লক্ষ্য করিতেছে। তস্কর উহা দেখিয়া ভয়বিহবলচিত্তে তৎক্ষণাৎ তথা হইতে পলায়ন করে। লোভের বশীভূত হইয়া ঐ তস্কর পুনরায় আগমন করে, কিন্তু পূর্বের ন্যায় ধনুৰ্ব্বাণধারী ব্যক্তিকে দর্শন করিয়া পলাইয়া যায়। এই রূপে ঐ তস্কর পুনঃ পুনঃ চেষ্টা করিয়াও যখন কৃতকাৰ্য্য হইতে পারিল না, তখন ঐ দস্য তুলসীদাসের নিকটে উপস্থিত হইয়া বলে, “সাধু বাবা ! যে ব্যক্তি রাত্রিকালে আপনার প্রহরীর কাৰ্য্য করে, সে ব্যক্তি কোথায় ? তাহার সহিত আমার বিশেষ আবশ্যক আছে।” দাসু্যর কথায় তুলসীদাস। বলেন, “বাপু হে! কে প্রহরীর কাৰ্য্য করে, তাহা ত আমি জানি না, তাহার আকৃতি কি রকম বলিতে পার ?” তস্কর, নবদুর্বাদলশ্যাম-কান্তি ধনুৰ্ব্বাণধারী পুরুষের আকৃতি বর্ণনা করিলে, তুলসীদাস বুঝিতে পারেন যে, শ্যামবর্ণ পুরুষ আর কেহই নহেন, তঁহারই প্ৰভু রামচন্দ্র। সামান্য তৈজস-পত্ৰাদি রক্ষার জন্য র্তাহার ইষ্টদেবকে রাত্ৰি জাগরণ করিতে হয়, ইহা ভাবিয়া বিশেষ লজ্জিত হইয়া, তিনি সেই মুহুর্তেই তাহার সমস্ত তৈজস-পত্র ঐ তস্করকে এবং দীনদুঃখী দিগকে প্ৰদান করেন। তুলসীদাস তস্করকে সম্বোধন করিয়া বলেন, “হে তস্কর! তুমি অতি ভাগ্যবান ব্যক্তি, তুমি বিনা সাধনায় যখন ভগবানের সাক্ষাৎ লাভ করিয়াছ, তখন তোমার তুল্য পুণ্যাত্মা আর কে আছে ? তুমি তোমার অভিলাষ মত দ্রব্যাদি গ্ৰহণ কর।” তস্কর তুলসীদাসের এবম্বিধ বাক্য শ্রবণ করিয়া ঐ সকল দ্রব্য লইতে অস্বীকার করে এবং আপনার যাহা কিছু সম্বল ছিল, তাহা সমস্ত বিতরণ করিয়া দিয়া তাহার শিষ্যত্ব গ্ৰহণ কয়ে । এক দিবস একজন ব্ৰাহ্মণ-কন্যা মৃতপতির সহিত সহমৃতা হইবার জন্য যাইতেছিলেন। পথিমধ্যে তুলসীদাসকে দেখিয়া ভূমিষ্ঠ হইয়া প্ৰণাম করেন। তুলসীদাস জানিতেন না যে, তিনি বিধবা হইয়াছেন, সুতরাং তিনি তাহাকে