পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Str8 . জীবনী-সংগ্ৰহ । দেখিতে পাইলেন, এক ব্যক্তি র্যাত ঘুরাইয়া কলাই ভাঙ্গিতেছে। কলাই সকল চুৰ্ণ বিচুর্ণ হইয়া যাতার চারিদিকে পড়িয়া যাইতেছে। ইহা দেখিয়া কবীর তঁহার মনকে গভীর বিষাদে নিমগ্ন করেন। তিনি বলিয়া উঠেন, “হায়, সংসার রূপ চক্রাবৰ্ত্তে যাবতীয় মনুষ্য কি এই সকল কলাইএর ন্যায় চূর্ণ বিচূর্ণ হইয়া নরক-পথের পথিক হয় ? আর তাঁহাই বা বলি কেমন করিয়া ; আমি ত দেখিলাম, এই যাতার মধ্যবৰ্ত্তী কীলকাশ্ৰিত কলাইসকল অক্ষতশরীরে অবস্থান করিতেছে এবং চতুষ্পার্শস্থ কলাইসকল চূৰ্ণীকৃত হইয়া চতুষ্পার্শ্বে নিপতিত হইতেছে। ইহাই প্রকৃত কথা যে, সংসার-চক্রের মধ্যবিন্দু কীলকরূপ ঈশ্বরকে যে ব্যক্তি আশ্রয় করিয়া থাকে, সেই ব্যক্তি সংসার-চক্ৰে পেষিত হয় না এবং সেই ব্যক্তিই অক্ষুন্ন ভাবে সাধু-জীবন যাপন করিয়া এই পৃথিবী হইতে বিদায় গ্ৰহণ করিতে পারে।” এক সময়ে কবীর কৌতুহলপরবশ হইয়া জনপদ ভ্ৰমণ করিতে গমন করেন। তিনি জনপদ হইতে স্বীয় আশ্রমে প্ৰত্যাবৰ্ত্তন করিলে, তাহার সহযাত্ৰিগণ জিজ্ঞাসা করেন, “মহাশয় । আপনি জনপদে কি দেখিলেন ?” কবীর ক্ষুন্নমনে বলেন, “জনপদের দুর্দশার কথা তোমাদিগকে আর কি বলিব ! বেদবিদ ব্ৰাহ্মণ-বংশীয়েরা বেন্দহীন ও জ্ঞানহীন হইয়া যাইতেছে ; আর শূদ্র জাতীয়েরা ব্ৰাহ্মণদিগের অধিকৃত গীতাদি পুস্তকের জ্ঞানচর্চা করিাতেছে। প্ৰবঞ্চকগণ স্বচ্ছন্দে জীবিকা নিৰ্বাহ করিতেছে, কিন্তু সাধুব্যক্তিদিগের অন্ন জুটিতেছে না। সাধবী ও পতিব্ৰতার অদৃষ্ট একখানি সামান্য বস্ত্ৰও মিলে না, কিন্তু ব্যভিচারিণিগণ বহুমূল্য বস্ত্র পরিধান করিয়া সুখী হইতেছে। পণ্ডিতদিগের উপদেশানুসারে কেহই চলে না, কেহই তাহাদের সমাদর করে না, কিন্তু কপটগণ সমাজের শীর্ষস্থান অধিকার করিয়া