পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাধক রামপ্রসাদ । RRG প্ৰভু এই গীতটী দুই-তিনবার পাঠ করিয়া ভাবে গদগদচিত্ত হইয়া রামপ্ৰসাদকে ডাকাইলেন। রামপ্রসাদ তাহার সম্মুখে উপস্থিত হইলে তিনি প্রেমাশ্র্যপূর্ণলোচনে কহিলেন, “রামপ্রসাদ ! তুমি অতি সাধুপুরুষ, তোমার আর পরাজ্ঞাবৰ্ত্তী হইয়া থাকিবার প্রয়োজন নাই। আমি তোমার মাসিক ত্ৰিশ টাকা বৃত্তি নিরূপণ করিয়া দিলাম, তুমি তোমার ইচ্ছামত স্থানে থাকিয়া সুখে কালযাপন কর।” এই ঘটনা হইতেই রামপ্ৰসাদের ভাবীজীবনের পথ পরিষ্কৃত হইল। যদি ধনস্বামী তাহার প্রতি গুণ-বিমূঢ়ের ন্যায় ব্যবহার করিতেন, তাহা হইলে রামপ্ৰসাদের পরিণাম কি হইত ? হয় তা তাহার জীবন কেবল দুঃখ-ভার বহনেই অতিবাহিত হইত এবং তঁাহার রসভাবময়ী লেখনী হয় ত কেবল খাতা লিখিয়াই ক্ষুন্নমনে ক্ষান্ত থাকিত । কিন্তু গুণগ্ৰাহী প্রভুর সামাজিকতা ও বদ্যান্যতা-গুণে র্তাহার মন চিরদিনের মত স্বাধীনতাপ্ৰাপ্ত হইয়াছিল। রামপ্ৰসাদ বাটী প্ৰত্যাগত হইয়া নিশ্চিন্তে অহরহ শ্যাম-গুণানুকীৰ্ত্তনে অভিনিবিষ্ট হইলেন এবং পঞ্চমুণ্ডি আসন প্ৰস্তুত করিয়া করালবদনা কালীর সাধনা করিতে লাগিলেন। এই সময়ে রামপ্ৰসাদের আয়বৃদ্ধির আরও একটা উপায় হইয়াছিল। যাহাদিগের কীৰ্ত্তনাদি কোন গীতের প্রয়োজন হইত, তাহারা সকলেই র্তাহার নিকট রচনা করাইয়া লইয়া যাইত এবং কালীর ও কবির প্রণামী স্বরূপ নানাপ্রকার উপহার প্রদান করিত। ঐ সময়ে রামপ্ৰসাদের যেরূপ আয় হইতে লাগিল, তাহাতে তিনি অর্থাপ্রিয় হইলে, সংসারের আবশ্যক ব্যয় নিৰ্বাহ করিয়াও, অনায়াসে বিপুল ধনসঞ্চয় করিতে পারিতেন। কিন্তু । তিনি সে প্রকৃতির লোক ছিলেন না। র্তাহার হাতে কিছু থাকিলে সম্মুখে দানেচিত। পাত্ৰ উপস্থিত দেখিলেই তাহাকে যথাসাধ্য দান করিতেন। জী-১৫