পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

TRO জীবনী-সংগ্ৰহ । রামপ্রসাদ কোন সময়ে বিবাহ করিয়াছিলেন, তাহা ঠিক বলা যায় না। কেহ কেহ বলেন, অনুমান ১৬ বৎসর বয়সে তাহার বিবাহ হইয়াছিল। এরূপ জনশ্রুতি আছে যে, রামপ্ৰসাদ অপেক্ষ তাহার স্ত্রী অধিকতর সৌভাগ্যবতী ছিলেন ; কারণ তিনি প্ৰায়ই স্বপ্নযোগে শুষ্ঠামা মায়ের সাক্ষাৎ লাভ করিতেন। রামপ্রসাদ একস্থলে বলিয়াছেন,- “ধন্য দারা স্বপ্নে তারা প্ৰত্যাদেশ তারে । আমি কি অধম এত বৈমুখ আমারে ৷ জন্মে জন্মে বিকায়েছি পাদপদ্মে তব । কহিবার কথা নয়। বিশেষ কি কবি ৷ ইহা হইতেই অনুমান হয়, তাহার স্ত্রী ভাগ্যবতী ছিলেন। কুমারহট্টগ্রাম মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের জমিদারীভুক্ত ছিল। এই গ্রাম ভাগীরথীর নিকটস্থ বলিয়া মহারাজ এইস্থানে এক ধৰ্ম্মাধিকরণ ও বায়ুৰ সেবনের জন্য একটী অট্টালিকা নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। অবসরক্রমে তিনি এখানে আসিয়া বিশ্রাম করিতেন। রামপ্ৰসাদের গুণরূপ প্ৰফুল্ল অরবিন্দ-বিনির্গত যশঃ-পরিমল, প্ৰশংসাসমীরণসহকারে চতুর্দিক আমোদিত করায়ু, গুণগ্ৰাহী যশোরাশি নবদ্বীপাধিপতি রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় মহোদয়ের মানস-মধুকরকে আকৃষ্ট করিয়াছিল। এরূপ শুনিতে পাওয়া যায় যে, রাজা তঁহার অসামান্য গুণের বশবৰ্ত্তী হইয়া মাসিক বৃত্তি নিৰ্দ্ধারণপূর্বক স্বীয় সভাসদগণের মধ্যে সন্নিবেশিত করিবার জন্য বিস্তর চেষ্টা পাইয়াছিলেন ; কিন্তু রামপ্রসাদের তাদৃশ বিষয়াকাঙ্ক্ষা না থাকায়, তিনি মহারাজের প্রস্তাবে সন্মত হইতে পারেন নাই। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের অনুরোধ প্ৰত্যাখ্যাত হইয়াছিল বলিয়া, তিনি কিছুমাত্র অসন্তোষ প্ৰকাশ করেন নাই কিম্বা দুঃখিতও হন নাই ; বরং তঁহার গুণে মুগ্ধ হইয়া তাহাকে “কবিরঞ্জন” উপাধিতে ভূষিত করিয়াছিলেন,