পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বুদ্ধদেব। G. অশোকভাণ্ড বিতরণ করেন। ঐ সময়ে কুমারের মনের ভাব অবগতির জন্য মহারাজ তথায় একজন গুপ্তচর রাখিয়া দেন। অশোকভাণ্ড বিতরণ আরম্ভ হইলে কুমারীদিগের মধ্যে একজন করিয়া সিদ্ধার্থের নিকট আসিতে লাগিলেন এবং তঁহাদের প্রধান সহচরী রূপ, গুণ, বংশমর্য্যাদা প্ৰভৃতির বিশেষ পরিচয় দিতে লাগিল। পরিচয় দেওয়া শেষ হইলে অশোকভাণ্ড প্ৰদত্ত হইতে লাগিল । সমুদয় অশোকভাণ্ড বিতরণ শেষ হইয়াছে, এরূপ সময়ে দণ্ডপাণির কন্যা গোপা কুমার-সন্নিধানে উপস্থিত হইয়া অশোকভাণ্ড প্রার্থনা করেন। ঐ সময়ে অশোকভাণ্ড আর না থাকায়, কুমার গোপাকে সম্বোধন করিয়া বলেন, “সুন্দরি । তুমি সকলের শেষে আসিলে কেন ?” এই কথা বলিয়া আপন বহুমূল্য অঙ্গুরীয় উন্মোচন করিয়া দেন। পরিণয় কি অদ্ভুত ব্যাপার। ইহা বিধাতার এক অপূৰ্ব্ব লীলা । কে দুই অপরিচিত হৃদয়কে সম্মিলিত, পরিচিত ও একীভূত করে, কে উভয়ের হস্তকে একত্র মিলিত করে, কে পরস্পরের নয়নকে একস্থানে সংস্থাপিত করিয়া দ্বৈতভাব বিলোপ করে, কাহার গুণে এক অপরের হৃদয়ে প্রবিষ্ট ও লুক্কায়িত হইয়া যায়, কে একের শোণিত অপরের সঙ্গে মিশাইয়া দেয়, কে উভয়কে উভয়ের সুখদুঃখভাগী করে, কে একের প্রাণ অপরের সহিত মিশাইয়া দ্রবীভূত ধাতুর মত তরল প্ৰেম-রসাশ্ৰিত করিয়া রাখে, কে ইহার তত্ত্ব বলিবে ? একের নয়নজল অপরের নয়নজলে মিশিয়া নদী হয় কেন ? দুই অঙ্গ এক হইয়া যায় কেন ? উভয়ের দৃষ্টিতে প্রেম-রাসের উদ্রেক হয় কেন, কে বলিবে ? দাম্পত্যপ্রণয় অতি বিস্ময়কর। ইহা কেমন করিয়া হয় ও কেন হয়, কেহ জানে না। যাহার লীলা, তিনিই উভয়ের হৃদয়ে বসিয়া গোপনে কি অপূর্ব মধুর রসের সঞ্চার করেন, তাহা বুদ্ধির অতীত। চুতবৃক্ষ